কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচা খেলে কি হয়
প্রিয় পাঠক আপনারা অনেকেই কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক
তথ্য জানতে চান। তাই আজ এই আর্টিকেলে কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত সকল সঠিক তথ্য তুলে ধরা হলো।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আরো জানতে পারবেন কলার মোচা খেলে কি হয়,
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে কি হয়, কলার মোচার ঔষধি গুণসমূহ, কলা মোচার পুষ্টি
উপাদান সম্পর্কে। তাই কলার মোচা সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে এই
আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।
পোষ্ট সূচিপত্রঃ কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার মোচা খেলে কি হয়
- কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলার মোচা খেলে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে কি হয়
- কলার মোচার ওষুধিগুণ সমূহ
- কলার মোচার পুষ্টি উপাদান
- কলার মোচায় কি আয়রন আছে
- কলার মোচা খেলে কি সমস্যা কমে?
- করার মোচা কোন রোগের সমস্যা কমায়
- কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- লেখকের মন্তব্যঃ কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
মানব শরীরে জন্য কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি আপনারা এই বিষয়ে
অনেকেই সঠিক তথ্য জানতে চান। কলার মোচা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী, তবে
কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা অপকারী। করার মোচা খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের
পুষ্টি উপাদান এখান থেকে পেয়ে থাকি। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক মোচা খাওয়ার
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতাঃ
১. রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান আছে। তাই একজন মানুষের রক্তশূন্যতা
দূর করতে কলার মোচা মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কোন ব্যক্তির
রক্তশূন্যতা দূর করতে নিয়মিত কলার মোচা খেতে হবে।
২. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচার মধ্যে যেসব পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি পুষ্টি
উপাদান হলো ভিটামিন এ। ভিটামিন এ মানুষের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনার দৃষ্টি শক্তি বাড়ানোর জন্য নিয়মিত কলার মোচা
খেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় সজনে ডাটা খাওয়ার উপকারিতা
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচা হলো বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি খাবার। এর মধ্যে বিভিন্ন পুষ্টি
উপাদানের পাশাপাশি বিদ্যমান আছে ফ্যালোনিক এসিড,ট্যানিন,ফ্লেভানয়েড ও বিভিন্ন
ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যে উপাদানগুলো ক্যান্সারের জী বানু ধ্বংস করতে সাহায্য
করে। তাই নিয়মিত কলা মোচা খাবার ফলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়।
৪. হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। আরো আছে বেশ
কয়েক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যেসব পুষ্টি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
হৃদরোগ নিরাময়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই মাঝে মাঝে কলার মোচা খাওয়ার
ফলে হৃদ রোগের ঝুঁকি কমে যায়।
৫. ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করেঃ
কলার মোচার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান উপস্থিত আছে। এসব পুষ্টি উপাদান
ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলা মোচা খাওয়ার কারণে
ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমে যায়।
৬. হাড়ের ক্ষয়রোধ কত সাহায্য করেঃ কলার
মোচায় যেসব পুষ্টি উপাদান আছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কুয়েরসেটিন ও
ক্যাটেচিনস দুটি পুষ্টি উপাদান। যে উপাদান দুটি হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য
করে। যদি আপনার হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যা থাকে তাহলে আপনি আজ থেকেই কলার মোচা খেতে
পারেন।
৭. ঋতুস্রাবের সমস্যা কমাতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচা এমন একটি পুষ্টিকর খাবার যা ঋতুস্রাবের ব্যথা কমাতে ও অতিরিক্ত রক্তপাত
কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮. পিরিয়ড স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করেঃ
আমাদের মধ্যে যেসব নারীর পিরিয়ড স্বাভাবিক হয় না অর্থাৎ নিয়মিত হয় না তাদের
জন্য কলার মোচা খুবই উপকারী। যদি আপনি নিয়মিত করা মোচা খান তাহলে আপনার নিয়মিত
পিরিয়ড হবে। কারণ কলার মোচার মধ্যে যেসব পুষ্টি উপাদান আছে সেগুলো পিরিয়ড
স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
৯. গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেঃ
কলার মোচার মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
গ্যালাক্টাগাগ নামক উপাদান। এই উপাদানটি একজন দুগ্ধ প্রদানকারী মায়ের বুকের দুধ
বাড়াতে সাহায্য করে।
১০. ওভারিয়ান সিনড্রোম সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা রাখেঃ
বর্তমানে আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারীর ওভারিয়ান সিনড্রোম অথবা পিসিওএস দেখা
যায়। এই সমস্যা থাকার কারণে একজন নারীর সন্তান ধারণ সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা
দেখা যায়। নিয়মিত করার মোচা খাওয়ার ফলে এ ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া
যায়।
১১. কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা দূর করেঃ কলার
মোচা এমন এক ধরনের খাবার যার মধ্যে আছে অনেক পুষ্টিগুণ। নিয়মিত কলার মতো খাবার
ফলে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা আছে, তাদের কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা দূর
হয়ে যায়।
১২. পেট ফোলা জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ
যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত করার মোচা খেতে পারেন তাহলে তার পেট ফোলা জনিত সমস্যা
দূর হবে। কারণ কলার মোচার মধ্যে অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যা পেট ফোলা জনিত সমস্যা
দূর করতে সাহায্য করে।
১৩. মন ভালো রাখতে সাহায্য করেঃ কলার মোচার
মধ্যে আছে ম্যাগনেসিয়াম যা মানুষের বিষণ্ণতাকে দূর করতে সাহায্য করে। তাই যারা
নিয়মিত বিষন্নতায় ভোগেন তাদের জন্য এই খাবারটি হতে পারে উত্তম একটি খাবার।
নিয়মিত কলার মোচা খাবার ফলে মন ভালো থাকে।
১৪. বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করেঃ কলার
মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত আছে। তাই
যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত কলার মোচা খান তাহলে তার শরীরে বয়সের ছাপ পড়বে না।
১৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেঃ
কলার মোচের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। কলার
মোচা নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের ভেতরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
১৬. চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করেঃ যারা
দীর্ঘদিন থেকে চুল পড়া সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য উত্তম সমাধান হতে পারে কলার
মোচা। কারণ নিয়মিত কলার মোচা খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়ে যায়।
১৭. আলসার রোগ দূর হয়ঃ নিয়মিত কলা মোচা
খাওয়ার কারণে দীর্ঘদিনের আলসার রোগ দূর হয়। কারণ কলার মোচার মধ্যে বিভিন্ন
ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। তাই আলসার রোগ দূর করতে নিয়মিত
কলার মোচা খেতে পারেন।
১৮. মুখের ব্রণ ও কালচে দাগ দূর করতে সাহায্য করেঃ
করার মোচা এমন এক ধরনের পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার যা নিয়মিত গ্রহণ করার কারণে
মুখের ব্রণ ও কাচের দাগ দূর করতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনার মুখের ব্রণ অথবা
কালচে দাগ থাকে তাহলে নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন।
১৯. হিমোগ্লোবিন তৈরিঃ আমাদের দেহের রক্তের
অন্যতম একটি উপাদান হলো হিমোগ্লোবিন। নিয়মিত কলা মোচা খাওয়ার কারণে আমাদের
শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়। যার ফলে শরীরে ব্যাপক পরিমাণে রক্ত উৎপাদন হয় আর
রক্তশূন্যতা হওয়ার সুযোগ থাকে না।
২০. হাড়ের ক্ষয় রোধ করেঃ কলার মোচের মধ্যে
প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম বিদ্যমান আছে। আমাদের বেশিরভাগ মানুষের বয়স ৪০ পার
হওয়ার পর থেকে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা যায়। আর ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে
হারের ক্ষয় দেখা যায়। তাই হাড়ের ক্ষয় রোধ করতে নিয়মিত কলার মোচা খেতে পারেন।
কলার মোচা খেলে কি হয়
আমাদের মধ্যেই অনেকেই কলার মোচা খেলে কি হয় এ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চায়।
করার মোচা হলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি খাবার। নিয়মিত
কলার মোচা খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের উপকার হয়ে থাকে। যেমন কলার
মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ বিদ্যমান আছে। ভিটামিন এ থাকার কারণে
রাতকানা রোগসহ চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলার মোচা খেলে কি কি উপকার হয়ঃ
- রাতকানা রোগ দূর হয়
- দৃষ্টিশক্তি বেড়ে যায়
- হজম শক্তি বেড়ে যায়
- ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়
- হৃদয় রোগের ঝুঁকি কমে যায়
- রক্তশূন্যতা দূর হয়
- ওভারিয়ান সিনড্রোম সমস্যা দূর হয়
- কোষ্ঠকাঠিন্য জনীত সমস্যা দূর হয়
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
- হাড়ের ক্ষয় রোধ হয়
- চুল পড়া বন্ধ হয়
- আলসার রোগ দূর হয়
- মুখের ব্রণ ও কালচে দাগ দূর হয়
- রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়
- পেট ফোলা জনিত সমস্যা দূর হয়
- বয়সের ছাপ দূর হয়
- মন ভাল থাকে
- ঋতুস্রাবের সমস্যা দূর হয়
- গর্ভবতী মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি হয়
- পিরিয়ড স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে
গর্ভাবস্থায় কলা মোচা খেলে কি হয়
আমাদের দেশের অনেক গর্ভবতী মায়েরা গর্ভাবস্থায় কলা মোচা খেলে কি হয় এই বিষয়টি
সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে থাকেন। কারণ গর্ভাবস্থায় করার মোচা খাওয়ার
অনেক উপকারিতা আছে। কিন্তু গর্ভ অবস্থায় কলার মোচা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়
এই বিষয়টি অনেকেই জানে না। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ব অবস্থায় কলার মোচা
খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় অথবা কি হয়।
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে যেসব উপকার পাওয়া যায়ঃ
- গর্ভে থাকা শিশুর মস্তিষ্কের গঠন ভালো হয়।
- গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খেলে শিশুর শারীরিক গঠন ভালো হয়।
- যেহেতু কলার মোচার মধ্যে ভিটামিন এ আছে তাই শিশুর দৃষ্টি শক্তি ভালো হয়।
- শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- শিশুর ত্বক ভালো হয়।
- গর্ভে থাকা শিশুর চুলের গঠন ভালো হয়।
- শিশুর ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়।
- শিশুর শরীরে রক্তস্বল্পতা দেখা যায় না।
- গর্ভে থাকা শিশুর বুদ্ধি ভালো হয়।
কলার মোচার ওষুধিগুণ সমূহ
কলার মোচা এমন একটি খাবার যে খাবারের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ওষুধি গুন আছে। যদি
কোন ব্যক্তি নিয়মিত নিয়ম করে কলা মোচা খায় তাহলে তার শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ
ব্যাধি আর হবে না। কলার মোচা একাধারে অনেকগুলো রোগের ঔষধ হিসেবে কাজ করে। চলুন
তাহলে জেনে নেওয়া যাক মোচার ঔষধি গুণসমূহঃ
আরো পড়ুনঃ
কুমারীলতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলার মোচার ওষুধিগুণঃ
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
- ডায়াবেটিস এর ঝুকি কমায়
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
- পেট ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে
- আলসার দূর করতে সাহায্য করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
- রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
- গর্ভবতী মায়ের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- মন ভালো রাখে
- ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে
- চুল পড়া বন্ধ করে
- হাড়ের ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে
- দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
- রাতকানা রোগ দূর করতে সাহায্য করে
- ঋতুস্রাব সমস্যা দূর করে
- নিয়মিত পিরিয়ড হতে সাহায্য করে
কলার মোচার পুষ্টি উপাদান
কলার মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। একটি কলার মোচা
খাওয়ার মাধ্যমে একজন ব্যক্তির শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যোগ হয়।
নিয়মিত কোন ব্যক্তি কলার মোচা খেলে তার শরীর থেকে বিভিন্ন রোগ দূর হয়ে যায়।
কারণ কলার মোচার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান আছে।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কলার মোচার মধ্যে কি কি পুষ্টি উপাদান কি পরিমানে
আছে।
কলার মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান আছে।
এছাড়াও ভিটামিন এ, ভিটামিন বি সিক্স, ভিটামিন ই এরকম অনেকগুলো উপাদান বিদ্যমান
আছে। চলুন তাহলে ছক আকারে দেখে নেওয়া যাক প্রতি ১০০ গ্রাম কলার মোচার মধ্যে কোন
উপাদান কি পরিমাণে পাওয়া যায়।
ক্রমিক নং | পুষ্টি উপাদানের নাম | পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ |
---|---|---|
১ | ভিটামিন এ | পর্যাপ্ত পরিমাণে |
২ | ভিটামিন বি সিক্স | পর্যাপ্ত পরিমাণে |
৩ | ভিটামিন সি | পর্যাপ্ত পরিমাণে |
৪ | ভিটামিন ই | ৪২০ মিলিগ্রাম |
৫ | প্রোটিন | ১.৭ গ্রাম |
৬ | ক্যালসিয়াম | ৩২ মিলিগ্রাম |
৭ | ফসফরাস | ৪২ মিলিগ্রাম |
৮ | লৌহ | ১.৬ মিলিগ্রাম |
৯ | ফ্যাট | ০.৭ গ্রাম |
১০ | পটাশিয়াম | ১৮৫ মিলিগ্রাম |
১১ | কার্বোহাইড্রেট | ৫.১ গ্রাম |
১২ | রিবোফ্লোবিন | .০২ মিলিগ্রাম |
১৩ | আশ | ১.৩ গ্রাম |
১৪ | থায়ামিন | .০৫ মিলিগ্রাম |
কলার মোচায় কি আয়রন আছে
আপনারা অনেকেই জিজ্ঞেস করে থাকেন করার মোচায় কি আয়রন আছে। কলার মোচাতে অন্যান্য
পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। যার ফলে কলার মোচা খাওয়ার
কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি বেড়ে যায়, রাতকানা জনিত সমস্যা দূর হয় অর্থাৎ চোখের
বিভিন্ন সমস্যা দূর হয় নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার কারণে। তাই এক কথায় বলা যায়
কলার মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান আছে।
কলার মোচা খেলে কি সমস্যা কমে
কলার মোচা খেলে কি সমস্যা কমে আপনারা অনেকেই এই বিষয়ে জানতে চান। কলার মোচা খেলে
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা কমে যায়। তার কারণ হলো কলার মোচার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। তাই যদি নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া
যায় তাহলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আপনার শরীরের বিভিন্ন
সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কলার মোচা খেতে পারেন।
কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
কলার মোচা খাওয়ার কি কি উপকারিতা আছে?
কলার মোচা খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকি। যেমন-
রাতকানা রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
রক্তে হিমোগ্লোবিন বেড়ে যায়
হাড় ক্ষয় রোধ হয়
ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়
ডায়াবেটিস রোগ হতে প্রতিরোধ পাওয়া যায়
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
হজম শক্তি বেড়ে যায়
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়
আলসার রোগ দূর হয়
মন ভালো রাখে
চুল পড়া ভালো হয়
কলার মোচা খাওয়ার তিনটি উপকারিতা কি কি?
কলার মোচা খাওয়ার বিভিন্ন উপকারের মধ্যে তিনটি উপকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উপকার তিনটি হলো-
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়
রক্তস্বল্পতা কমায়
ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
কলার মোচার ইংরেজি নাম কি?
আমরা বাঙালি হিসেবে বেশিরভাগ জিনিসের নাম বাংলায় বলতে পারলেও ইংলিশে নাম আমরা
অনেকেই বলতে পারি না। তেমনি একটি খাবারের নাম হলো করার মোচা। কলার মোচাকে
ইংরেজিতে কী বলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। কলার মোচার ইংরেজি নাম হলো প্লান্টেইন
ফ্লোয়ার(Plantain Flower)
কলার মোচায় কি আছে?
কলার মোচায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান আছে। এর
মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ভিটামিন বি সিক্স,
ভিটামিন ই, প্রোটিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস,
লৌহ, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেট, রিবোফ্লাবিন, থায়ামিন, আশ।
কলার থোর খেলে কি হয়?
কলার থোর এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। যার ফলে কলার থোর
খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। আর পুষ্টি
উপাদান যোগ হওয়ার কারণে বিভিন্ন রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। অর্থাৎ
আমরা যদি নিয়মিত কলার থোর খেয়ে থাকি তাহলে আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাব।
লেখকের মন্তব্যঃ কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
কলার মোচা এমন এক ধরনের খাবার যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান আছে। নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার মাধ্যমে আমাদের শরীরে
বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। যার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন
ধরনের রোগ ব্যাধি আর হতে পারে না। তাই লেখক হিসেবে আমরা মন্তব্য হলো আপনারা
নিয়মিত কলার মোচা খাবেন এতে করে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।
আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারলেন কলার মোচা খাওয়ার উপকারিতা ও
অপকারিতা। আপনারা আরো জানতে পারলেন কলার মোচার পুষ্টিগুণ, কলার মোচা খেলে কি হয়,
কলার মোচার ওষুধি গুণ, কলার মোচায় কি আয়রন আছে। আমাদের এই আর্টিকেলে নিয়মিত
এরকম গুরুত্বসম্পন্ন তথ্য সমৃদ্ধ পোস্ট পাবলিশ করা হয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ
তথ্যসমৃদ্ধ এরকম আর্টিকেল পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url