কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা

প্রিয় পাঠক আপনি কি কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এই পোস্টে আজ আলোচনা করবো কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।
কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

এই পোস্টের মাধ্যমে আপনারা আরো জানতে পারবেন, গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা, কচুর লতি খেলে কি হয় ও কচুর লতি রেসিপি। কচুর লতি সম্পর্কিত সকল তথ্য জানতে আমাদের এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

পোস্ট সূচীপত্রঃ কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা

কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

কচুর লতি অত্যন্ত সুস্বাদু একটি সবজি। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, এন্টি অক্সিডেন্ট ও মিনারেল কচুৃর লতির মধ্যে বিদ্যমান আছে। কচুর লতি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যোগ হয় এবং আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পায়। কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কি এই বিষয়ে আপনার অনেকেই জানতে চান। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা

কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যমান থাকায় এটি মানব শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কচুর লতি খাওয়ার কারণে হজম শক্তি বেড়ে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ওজন কমে যায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এরকম অনেক উপকার করে থাকে। কচুর লতি খেলে আমরা আরো কি কি উপকার পাই চলুন তা বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন মিনারেল এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যামান আছে। যা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃ আমাদের মধ্যে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা দীর্ঘদিন থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছেন। তাদের জন্য উত্তম সমাধান হতে পারে কচুর লতি। কারণ কচুর লতি খাওয়ার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া যায়।

ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ কচুর লতির মধ্যে ক্যালরি খুবই কম থাকে এবং ফাইবার অনেক বেশি থাকে যার ফলে কচুর লতি খাওয়ার কারণে মানুষের ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকে।

রক্তশূন্যতা দূর করেঃ কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে লৌহ বিদ্যমান আছে যা মানুষের রক্ত বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনার রক্তশূন্যতা দূর করতে আজ থেকে কচুর লতি খাওয়া শুরু করতে পারেন।

হাড়ের গঠন শক্ত করেঃ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হল কচুর লতি। কচুর লতি খাওয়ার ফলে মানুষের হাড়ের গঠন শক্ত হয়।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করেঃ কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন ভিটামিন মিনারেল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান আছে। বিশেষ করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে অত্যন্ত চমৎকার ভূমিকা পালন করে।

হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ নিয়মিত কচুর লতি খাওয়ার মাধ্যমে মানুষের হজম শক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। যার ফলে পাকস্থলী ভালো থাকে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ কচুর লতি রক্তের মধ্যে বিদ্যমান শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। যার ফলে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ থাকে। আর সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

মেটাবলিজম উন্নত করেঃ কচুর লতির মধ্যে বিদ্যমান ভিটামিন বি কমপ্লেক্স মানুষের মেটাবলিজম উন্নত করতে সাহায্য করে।

কচুর লতি খাওয়ার অপকারিতা

উপরের আলোচনা থেকে আমরা কচুর লতির খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জেনেছি। কিন্তু কচুর লতি খাওয়ার কারণে যেমন উপকার হয় তেমন কিছু অপকারও দেখা যায়। অর্থাৎ আমরা যদি উপকারের আশায় অধিক পরিমাণে কচুর লতি খেয়ে ফেলি তাহলে বেশ কিছু সমস্যা পরিলক্ষিত হয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কচুর লতি খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে যাবতীয় সকল তথ্য।
  1. গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যা বেড়ে যায়ঃ কচুর লতির মধ্যে অনেক পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে যা মানুষের পেটের ভেতর গ্যাসটিক জনিত সমস্যা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই যারা আগে থেকে গ্যাস্ট্রিক জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য কচুর লতি পরিমাণে কম খাওয়া ভালো।
  2. ডায়রিয়ার জনিত সমস্যা হতে পারেঃ কচুর লতি খাওয়ার কারণে বিভিন্ন সময় ডায়রিয়া জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  3. এলার্জি বেড়ে যায়ঃ কচুর লতির মধ্যে যেসব উপাদান বিদ্যমান আছে সেগুলো যেমন মানুষের উপকার করে এর পাশাপাশি যাদের অ্যালার্জি জনীত সমস্যা আগে থেকে আসে তাদের অ্যালার্জি আরো বাড়িয়ে দেয়।
  4. কিডনির সমস্যা তৈরি করেঃ অক্সলেট নামক একটি উপাদান কচুর লতির মধ্যে বিদ্যমান আছে। এই উপাদান মানুষের কিডনিতে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে।
ঔষধের কার্যকারিতা নষ্ট করেঃ এমন কিছু ঔষধ আছে যেগুলো খাওয়ার আগে কচুর লতি খেলে এসব ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই ঔষধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপরে ঔষধ ও কচুর লতি খাবেন।

গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা

কচুর লতি এতটাই পুষ্টি উৎপাদনে ভরপুর একটি খাবার গর্ভাবস্থায় এটি খেলে বিভিন্ন ধরনের উপকার পাওয়া যায়। গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য কচুর লতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। কচুর লতি গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকার ভূমিকা পালন করে।গর্ভাবস্থায় কচুর লতি খেলে আরো কি কি উপকার পাওয়া যায় বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

রক্তশূন্যতা দূর করেঃ গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে রক্তশূন্যতা। আর এই সমস্যা দূর করতে কচুর লতি মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উচ্চ মানের মিনারেল ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান আছে। এই উপাদান গুলো গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ কচুর লতি অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার হলেও এর মধ্যে শর্করা পরিমাণ খুবই কম। শর্করা কম থাকার কারণে এটি খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।

গর্ভবতী মায়ের হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়ঃ কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যামান আছে। যেগুলো শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয় এবং হৃদ রোগের ঝুকি কমায়।

রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করেঃ কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন উপস্থিত আছে যা গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্ত উৎপাদন করতে সাহায্য করে।

হাড় মজবুত করতে সাহায্য করেঃ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার হলো কচুর লতি। কচুর লতি খাওয়ার ফলে গর্ভে থাকা শিশু এবং গর্ভবতী মায়ের হারের গঠন মজবুত হয়।

হজম শক্তি বাড়ায়ঃ কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন উপাদানের পাশাপাশি ফাইবার থাকে। আর ফাইবার গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়ঃকচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে খনিজ পদার্থ ভিটামিন ও মিনারেল বিদ্যামান আছে। এই উপাদানগুলো গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এগুলো ছাড়াও একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য কচুর লতি আরো অনেক উপকার করে থাকে। তবে গর্ভবতীর মায়ের জন্য কচুর লতি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। কারণ আপনি বর্তমানে কোন পজিশনে আছেন এটা একমাত্র ডাক্তার ভালো বলতে পারবে। তাই কচুর লতি খাওয়ার আগে কতটুকু খেতে হবে কয়দিন পরপর খেতে হবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
কচুর লতি রেসিপি

কচুর লতি রেসিপি

কচুর লতি অত্যন্ত পুষ্টিমান সমৃদ্ধ খাবার হলেও অনেকেই এটি সঠিকভাবে রান্না করতে পারেন না।সঠিকভাবে রান্না করতে না পারলে খেতে ভালো লাগবে না। তাই আমাদের আগে জানা প্রয়োজন কচুর লতি কিভাবে রান্না করতে হয় অর্থাৎ কচুর লতির রেসিপি কি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কচুর লতির রেসিপি সম্পর্কে সঠিক তথ্য।

কচুর লতি দিয়ে সুস্বাদু সবজি রান্না করার উপকরণঃ
  • কচুর লতি- ৫০০ গ্রাম
  • পেয়াজ কুচি - ১ কাপ
  • আদা বাটা - ১ টেবিল চামচ
  • রসুন বাটা - ১ টেবিল চামচ
  • হলুদ গুঁড়া - হাফ চা চামচ
  • মরিচ গুঁড়া - হাফ চা চামচ
  • জিরা - হাফ চা চামচ
  • ধনে গুরা - হাফ চা চামচ
  • লবণ - পরিমাণ মতো
  • তেল - ৩ টেবিল চামচ
  • ধনেপাতা কুচি- পরিমাণমতো
প্রস্তুত প্রণালীঃ
  • কচুর লতিগুলোকে সাইজ মত কেটে নিতে হবে।
  • কচুর লতিগুলোকে ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে পানি গুলো ছাড়িয়ে নিতে হবে।
  • একটি পাত্র চুলায় বসিয়ে এর মধ্যে তেল দিয়ে একটু গরম করে নিতে হবে।
  • এর মধ্যে পিয়াজ কুচি দিয়ে একটু ভেজে নিতে হবে।
  • আদাবাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, ধনে গুড়া, জিরা গুড়া ও লবন দিয়ে আরো বেশ কিছুক্ষণ এগুলো নাড়তে হবে।
  • মসলা ভালোভাবে কসানো হয়ে গেলে এর মধ্যে কচুর লতি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।
  • এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট মৃদু আচে রান্না করতে হবে।
  • এই ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে মাঝে মাঝে একটু নেড়ে দিতে হবে যেন নিচে না লেগে যায়।
  • এরপর রান্না মোটামুটি হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলতে হবে।
  • এরপর ধনেপাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে খাবার পরিবেশন করতে হবে।
এছাড়াও কচুর লতির স্বাদ বাড়ানোর জন্য এর সাথে টমেটো অথবা আলু অথবা অন্য কোন সবজি মিশিয়ে রান্না করতে পারেন। ঝাল লবণ আপনি যে পরিমাণ খাবেন সে পরিমাণ ব্যবহার করতে পারেন। কচুর লতি সুস্বাদু হওয়ায় এটির ভাত রুটি বা পরোটার সাথে খুবই মজা করে খাওয়া যায়। এছাড়া কচুর লতির ভর্তা, কচুর লতি ঝোল, কচুর লতির ইলিশ পাতোয়া খেতে খুবই মজা লাগে।

কচুর লতি খেলে কি হয়

কচুর লতি খেলে কি হয় এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চান। কচুর লতি খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। পুষ্টি উপাদান যোগ হওয়ার কারণে আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি দূর হয়। বিশেষ করে রক্তশূন্যতা দূর করতে খুবই চমৎকার ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে কচুর লতি চমৎকার ভূমিকা পালন করে থাকে।

কচুর লতি চাষ পদ্ধতি

কচুর লতি চাষ পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ একটি পদ্ধতি। কচুর লতি চাষ করতে গেলে অন্য ফসলের মত অনেক বেশি যত্নের প্রয়োজন হয় না। সামান্য যত্ন করার মাধ্যমে কচুর লতি চাষ করা যায়। তাই আগে আমাদের জানা প্রয়োজন কিভাবে কচুর লতি চাষ করতে হয়। কচুর লতি চাষ করতে হলে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চাষ করতে হয়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কচুর লতি চাষ পদ্ধতি।
  • কচুর লতি চাষ করার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি জমি নির্বাচন করতে হবে।
  • উক্ত জমি যেন খুব বেশি নিচু আবার খুব বেশি উঁচু না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
  • কচুর লতির জন্য পানি সেচ ও পানি নিষ্কাশন এর সুব্যবস্থা আছে এমন জমি নির্বাচন করতে হবে।
  • এরপর জমিকে ভালোভাবে ৭ থেকে ৮টি চাষ করতে হবে।
  • ভালোভাবে চাষ ও মই দেওয়া হয়ে গেলে উক্ত জমিতে কচুর লতির চারা বা কন্দ রোপন করতে হবে।
  • একটি চারা থেকে আরেকটি চারা দূরত্ব হবে দুই থেকে তিন ফিট এবং একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের দূরত্ব হবে ৩ থেকে ৪ ফিট এইভাবে চারা রোপন করতে হবে।
  • তবে জমি প্রস্তুতির সময় প্রয়োজন অনুযায়ী জৈব সার, ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি, জিপসাম, দস্তা, বোরন, ম্যাগনেসিয়াম ও সালফার এগুলো মিশিয়ে নিয়ে জমি প্রস্তুত করতে হবে।
  • কচুর লতি বের হওয়ার পর বিভিন্ন ধরনের আগাছা বের হয় সেই আগাছা গুলোকে নিড়ানি দিয়ে নিধন করতে হবে।
  • এরপর কচুর লতিতে বেশ কিছু পোকা হয় সেসব পোকা দমন করার জন্য প্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
  • বিভিন্ন ধরনের রোগ কচুর লতিতে আক্রমণ করতে পারে এসব রোগ দমনের জন্য ভালো মানের ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হবে।
  • ফলন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সারের পাশাপাশি হরমোন অথবা পিজিআর জাতীয় পণ্য ব্যবহার করতে হবে।
  • এছাড়া যদি অন্য কোন সমস্যা মনে হয় তাহলে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
কচুর লতির ইংরেজি কি

কচুর লতির ইংরেজি কি

কচুর লতি অত্যন্ত পুষ্টিকর ও গুণগত মানসম্পন্ন একটি খাবার। এটি খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে অনেক পুষ্টি উপাদান যোগ হয় এবং আমরা অনেক উপকৃত হই। যেহেতু আমরা বাঙালি তাই কচুর লতির বাংলা খুব সহজেই আমরা বলতে পারি কিন্তু ইংরেজিতে এটিকে কী বলে এটা আমরা অনেকেই বলতে পারি না। তাই আমরা অনেক সময় কচুর লতির ইংরেজি বিভিন্ন মাধ্যমে খোজার চেষ্টা করি। বাংলাতে এটাকে বলা হয় কচুর লতি আর ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় -Arum lobe.

কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন উত্তর

কচুর লতি খেলে কি প্রেসার বাড়ে?
কচুর লতির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো ওমেগা থ্রি। এছাড়াও কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাটি এসিড আছে। এই উপাদান গুলো মানুষের রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করে অর্থাৎ কচুর লতি খেলে প্রেসার বাড়ে না বরং প্রেসার নিয়ন্ত্রণ থাকে।

কচুর লতি খেলে কি ওজন বাড়ে?
কচুর লতির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট শর্করা ও ফাইবার বিদ্যামান থাকে। যে উপাদান গুলো অনেক ক্ষেত্রে মানুষের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

কচুর লতিতে কি আয়রন আছে?
কচুর লতিতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। কচুর লতি খাওয়ার ফলে মানুষের শরীরে প্রচুর পরিমাণে রক্ত যোগ হয়। এছাড়াও এটা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কচুর লতিতে কি ভিটামিন আছে?
কচুর লতি হলো এমন এক ধরনের সবজি যে সবজিতে বিভিন্ন রকমের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে।এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ভিটামিন বি ভিটামিন সি ফাইবার আয়রন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এরকম অনেক ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে।

কচুর লতি কখন পাওয়া যায়?
আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ হয়। সাধারণত ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে প্রচুর লতি রোপন করতে হয় মার্চ মাস থেকে শুরু হয়ে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কচুর লতি বাজারে পাওয়া যায়।

শেষ কথাঃ কচুর লতি খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন

কচুর লতি হলো এমন একটি সবজি যে সবজিতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান আছে। কচুর লতি খাওয়ার কারণে শরীরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। যার ফলে শরীর থেকে অনেক ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যায় এবং আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাই। কচুর লতি খেলে শরীরে রক্ত যোগ হয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে, হৃদয়ের ঝুঁকি কমে যায়।

এছাড়াও কচুর লতি খাওয়ার কারণে ওজন কমে যায়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, হজম শক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, হারের গঠন মজবুত হয়, গর্ভবতী মায়ের ও গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ঘটায়। এছাড়া আরো অনেক উপকার পাওয়া যায় কচুর লতি খাওয়ার ফলে। আবার কচুর লতি বেশি খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের সমস্যাও দেখা যায়।

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল গ্যাস্ট্রিক জনিত ও এলার্জি জনিত সমস্যা বেশি দেখা যায়। তবে লেখক হিসেবে আমার পরামর্শ হচ্ছে আপনারা শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করার জন্য কচুর লতি খেতে পারেন। তবে আপনার শরীর এটা সঠিকভাবে গ্রহণ করছে কিনা তার ওপর নির্ভর করে আপনাকে খেতে হবে। আর গর্ভবতী মায়েরা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কচুর লতি খাবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url