চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

চালতা আমাদের দেশের গ্রাম বাংলার একটি ঐতিহ্যবাহী টক জাতীয় ফল। চালতা খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্নভাবে উপকারিতা ও অপকারিতা পেয়ে থাকে। এটি একদিকে যেমন আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানের সরবরাহ করে অন্যদিকে কিছুটা অপকারিতা ও করে থাকে।
চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
চালতা খাওয়ার নিয়ম কি, চালতা খেলে কি কি উপকার হয় এবং গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। তাই চালতার পুষ্টিগুণ. উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো।

পোস্ট সূচিপত্রঃ চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

চালতা এমন একটি ফল যে ফলটি কাঁচা এবং রান্না করে দুভাবে খাওয়া যায়। বিশেষ করে চালতার আচার খেয়ে সবচেয়ে বেশি মজা পাওয়া যায়। চালতা খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান যোগ হয়। যার ফলে একদিকে যেমন পুষ্টি ঘাটতি পূরণ হয় তেমনি অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। তবে কিছু কিছু কারণে এটি আমাদের শরীরে অপকারিতা বয়ে নিয়ে আসতে পারে।

চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চালটা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য।

চালতা খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের দেশের নারীরা চালতা খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে থাকেন। বিশেষ করে যদি চালতার আচার হয় তাহলে তো কোন কথাই নেই। কারণ চালতা খেতে কিছুটা টক লাগে আর মেয়েরা এটাই বেশি পছন্দ করে। চালতার আচার খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্নভাবে উপকার পেয়ে থাকি। কারণ এর মধ্যে আছে অনেক ধরনের পুষ্টিগুণ। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ চালতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি বিদ্যমান আছে তাই চালতা খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি যোগ হয়। ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

রক্ত পরিষ্কার করেঃ রক্ত পরিষ্কার করতে চালতার রস খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। একই সাথে চালতা খাওয়ার কারণে রক্তের কোলেস্টেরল কমে যায়।

লিভার ও হার্টের টনিক হিসেবে কাজ করেঃ প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও শর্করা উপস্থিত থাকে চালতার ভিতরে। তাই চালতা খাওয়ার কারণে শরীরে ক্যালসিয়াম ও শর্করা যোগ হয়। আর ক্যালসিয়াম ও শর্করা লিভার ও হার্ট সুস্থ রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল হলো চালতা। চালতা খাওয়ার কারণে শরীরে এই দুটি উপাদান যোগ হয়। আর পটাশিয়াম ও এন্টিঅক্সিডেন্ট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ পালন করে।

দাঁতের সমস্যা দূর করে থাকেঃ আপনি যদি চালতার রস অথবা চালতার পাতা চিবিয়ে খেয়ে নিতে পারেন তাহলে আপনার দাঁত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হবে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ চালতা খাওয়ার কারণে শরীরের ভিতরে শর্করা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে।তাই যদি কোন ব্যক্তি নিয়মিত চালতা খায় তাহলে তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ থাকে।

হজম শক্তি বাড়ায়ঃ চালটা খাওয়ার কারণে পেটের ভিতরে থাকা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়।এছাড়া চালতা মানুষের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য যেসব উপাদান প্রয়োজন তা চালতার মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান আছে।

বাতের ব্যথা কমায়ঃ পানির সাথে কচি চালতা পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ার কারণে নতুন ও পুরনো বাতের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যাথা হলে কচি চালতা পাতার রস পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।

স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার রোধ করেঃ চালতার মধ্যে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পুষ্টি উপাদান আছে। এসব পুষ্টি উপাদান মহিলা মানুষের স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার রোধ করতে সাহায্য করে।

কিডনি ভালো রাখেঃ নিয়মিত চালতা খাওয়ার কারণে মানুষের কিডনি ভালো থাকে। কারণ চালতার মধ্যে কিডনি ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে।

শুক্রাণু বাড়াতে সাহায্য করেঃ যারা দীর্ঘদিন থেকে শুক্রাণু সমস্যা ভুগছেন তাদের জন্য উত্তম সমাধান হতে পারে চালতা। কারণ চালটা খাওয়ার কারণে শুক্রাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়।

জ্বর ঠান্ডা ও কাশি নিরাময় করেঃ চালতার মধ্যে ভিটামিন সি সহ বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান আছে। আপনি যদি জ্বর ঠান্ডা ও কাশি রোগে ভুগেন তাহলে চালতা খেতে পারেন। কারণ চালতা এই তিনটি রোগ নিরাময়ে দ্রুত কাজ করে থাকে।

কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চালতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ চালতাতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান কানের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখেঃ চালতার মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন উপাদান চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই আপনার চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত চালতা খেতে পারেন।

হাড় শক্তিশালী করেঃ চালতার মধ্যে আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়াম মানুষের হাড় শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

চর্মরোগ নিয়ন্ত্রণ করেঃ চালতার মধ্যে থাকা গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান গুলো চর্মরোগ নিরাময়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই আপনি যদি চর্ম রোগে আক্রান্ত হন তাহলে নিয়ম করে চালতা খেতে পারেন।

রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করেঃ চালতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন বিদ্যমান আছে। আয়রন মানুষের শরীরে রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে।

চালতা খাওয়ার অপকারিতা

চালতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বিদ্যমান থাকায় এটি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী।এটি খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরে যেমন পুষ্টি উপাদান যোগ হয় তেমনি আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন রোগ দূর হয়। তবে চালতা খাওয়ার ফলে উপকারিতার পাশাপাশি কিছু কিছু কারণে কিছুটা অপকারিতা হতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চালতা খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে।
  • চালতা টক জাতীয় ফল হওয়ার কারণে সামান্য একটু বেশি খেলে পেটে গ্যাস্ট্রিক হতে পারে।
  • বেশি উপকারের আশায় বেশি চালতা খেলে ডায়রিয়া জনিত সমস্যা হতে পারে।
  • যেহেতু চালতা টক জাতীয় ফল তাই বেশি হওয়ার কারণে প্রেসার লো হয়ে যেতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় চালতা বেশি খেলে বমি বমি ভাব হতে পারে।
  • আপনি অন্য কোন রোগের ঔষধ খেলে সে সঙ্গে চালতা খেলে ওষুধের কার্যকারিতা নষ্ট হতে পারে।
  • অতিরিক্ত চালতা খাওয়ার কারণে এলার্জি জনিত সমস্যা বেড়ে যায়।

গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা

চালতা খেলে কি কি উপকার হয় এটা আমরা অনেকেই জানি কিন্তু গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা কি এই বিষয়ে আমরা অনেকেই সঠিকভাবে জানি না। গর্ভাবস্থায় চালটা খেলে একজন গর্ভবতী মা বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকে। যা গর্ভে থাকার শিশু এবং গর্ভবতী মা দুইজনেরই অনেক কাজে লাগে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক গর্ভাবস্থায় চালতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
  • চালতা খাওয়ার কারণে গর্ভবতী মায়ের হজম শক্তি বেড়ে যায়।
  • চালতার মধ্যে ভিটামিন সি থাকায় চালতা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
  • চালতার মধ্যে পটাশিয়াম ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণ আছে, যার কারণে নিয়মিত চালতা খাওয়ার ফলে গর্ভবতী মায়ের হার্ট ভালো থাকে।
  • গর্ভবতী মা চালতা খাওয়ার ফলে গর্ভে থাকা শিশুর হার্টের সমস্যা দূর হয়।
  • চালতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকায় এটি নিয়মিত খাওয়ার কারণে গর্ভবতী মায়ের শরীরে রক্ত যোগ হয়।
  • চালতার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে যেগুলো গর্ভে থাকার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে গর্ভবতী মায়ের রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
  • গর্ভবতী মায়ের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চালতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
  • গর্ভবতী মায়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চালতার ভূমিকা অত্যন্ত চমৎকার।
  • গর্ভবতী মা চালতা খেলে গর্ভে থাকা শিশুর চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
কাঁচা চালতার উপকারিতা

কাঁচা চালতার উপকারিতা

চালতা এমন একটি ফল এটি কাঁচা পাকা উভয় অবস্থায় মানুষের জন্য অনেক বেশি উপকারী। চালতার আচার খেলে আমরা যেমন উপকৃত হয় তেমনি কাঁচা চালতাও আমাদের জন্য অনেক বেশি উপকার বয়ে নিয়ে আসে। কাঁচা চালতা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় চলুন এই বিষয়ের সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
  • লিভার ও হার্টের টনিক হিসেবে কাজ করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে
  • রক্তের কোলেস্টেরল কমায়
  • হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
  • গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটায়
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
  • রক্ত উৎপাদনে সাহায্য করে
  • রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে
  • কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে
  • পেটের সকল সমস্যা দূর করে
  • চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে
  • কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে
  • হাড় ও দাত মজবুত করে

চালতার আচারের উপকারিতা

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ চালতার আচার খেতে বেশি ভালোবাসেন। কাঁচা অবস্থায় চালতা অনেক মানুষ খুবই কম খায়। কিন্তু চালতার আচার পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের পছন্দের একটি খাবার। চালতা কাঁচা খেলে যেমন উপকার পাওয়া যায় তেমনি এর আচার খেলেও বেশ কয়েকটি উপকার পাওয়া যায়। নিচে চালতার আচার খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় তা দেওয়া হল।
  • স্তন ও জরায়ুর ক্যান্সার রোধ করে
  • গর্ভবতী মায়ের হার্ট ভালো রাখে
  • গর্ভে থাকার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি ভালো হয়।
  • ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
  • রক্ত উৎপাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
  • গর্ভবতী মায়ের রক্ত শূন্যতা দূর করে।
  • রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
  • রক্ত পরিষ্কার করতে সাহায্য করে।
  • কিডনি ভালো রাখার সাহায্য করে।
  • দাঁত ও হাড়ের গঠন উন্নত করে।
চালতা খাওয়ার নিয়ম

চালতা খাওয়ার নিয়ম

চালতার পাতা থেকে শুরু করে ফল প্রায় সবকিছুই খাওয়া যায়। চালতার পাতা খেলে এক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। আবার ফল খেলে এক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। চালতার আচার খেলে অন্যান্য উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু কোন নিয়মে চালতা খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায় চলুন এই বিষয়ে সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।

চালতা আপনি বিভিন্ন ভাবে খেতে পারেন তবে সবচেয়ে ভালো হয় আচার করে খেলে অথবা কাঁচা খেলে।কারণ চালতার আচার খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি অনেক বেশি উপকারী। অপরদিকে কাঁচা চালতা খাওয়া খুবই কষ্টকর একটা বিষয়। এটি খুবই টক জাতীয় ফল। তাই আমার মনে হয় চালতা আচার করে খাওয়ায় সবচেয়ে ভালো।

চালতার আচার রেসিপি

চালতা টক জাতীয় একটি ফল। চালতার আচার সঠিকভাবে রান্না না করলে আচার খাওয়া খুবই মুশকিল হয়ে যায়। আবার যদি রান্নার মধ্যে সামান্য ভুল ত্রুটি হয় তাহলে দেখা যায় এর সমস্ত পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আগে জানা প্রয়োজন চালতার আচার কিভাবে রান্না করতে হয় বা চালতার আচার রেসিপি সম্পর্কে। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক চালতার আচার রেসিপি সম্পর্কে সঠিক তথ্য।

প্রথমে চালতার আচারের জন্য যেসব উপকরণ নিতে হবে তা হল-

১. মাঝারি সাইজের চালতা ফল ২টি
২. তেজপাতা ২টি
৩. লবণের পরিমাণ এক টেবিল চামচ
৪. সরিষার তেলের পরিমাণ এক কাপ
৫. শুকনা মরিচ ৪ থেকে ৫টি
৬. পাঁচফোড়ন এক চা চামিচ
৭. ধনিয়ার গুড়া এক চা চামিচ
৮. মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামিচ
৯. সরিষা বাটা এক চামিচ
১০. চিনি আধা কাপ
১১. রসুন বাটা হাফ চা চামিচ
১২. গুড় হাফ কাপ
১৩. মৌরি গুড়া ১ টেবিল চামিচ
১৪. হলুদ গুঁড়া এক চা চামিচ
১৫. সিরকা ১ টেবিল চামিচ

আচার রান্নার পদ্ধতিঃ
  • প্রথমে চালতা গুলোকে চিকন চিকন করে কেটে নিতে হবে।
  • এরপর চালতা গুলোকে হালকা করে ছেকে নিতে হবে।
  • চালতা সামান্য হলুদ মিশিয়ে গরম পানিতে ভাপ দিয়ে নিতে হবে।
  • এরপর চুলার উপরে কড়াই বা প্যান বসিয়ে তেল গরম করে নিতে হবে।
  • করার মধ্যে তেজপাতা ও পাঁচফোড়ন অল্প করে ভেজে নিতে হবে।
  • পাঁচফোড়ন মোটামুটি সিদ্ধ হয়ে গেলে এর মধ্যে সিরকা গুড়া মশলা ও গুঁড়া মশলা মিশিয়ে নাড়তে হবে।
  • এভাবে কিছুক্ষণ নাড়ার পর মসলা কষা হয়ে গেলে এর মধ্যে ভাব দেওয়া চালতাগুলো দিতে হবে।
  • চালতা দেওয়ার পর ভালোভাবে নাড়তে হবে যেন চালতা এবং মসলা একে অন্যের সাথে মিশে যায়।
  • এরপর চিনি গুড় ও লবণ দিয়ে আরো কিছুক্ষণ নাড়তে হবে।
  • চিনি দেওয়ার পর আচার হালকা আঠালো হলে এর মধ্যে শুকনা মরিচ ও মৌরি গুঁড়া দিতে হবে।
  • তৈরি হয়ে গেল চালতার আচার।

চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর

চালতাই কোন কোন ভিটামিন আছে?
চালতা এমন একটি ফল যার মধ্যে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ভিটামিন সি, শর্করা, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, থায়ামিন, বিটাক্যারোটিন, শর্করা, রিবোফ্লোবিন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে।

চালতা গাছের পাতার কি কি উপকারিতা আছে?
ঠান্ডা ও কাশিজনীত সমস্যা সমাধানের জন্য চালতার পাতা বেশ ভালো কাজ করে। বিভিন্ন রোগের জন্য চালতা পাতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চালতা পাতা ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে থাকে। চালতা পাতা ভর্তা করে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন রোগের জন্য ভালো কাজ করে থাকে।

চালতার রস খেলে কি হয়?
বদ হজম ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে চালতার রস খুবই চমৎকার ভূমিকা রাখে। এছাড়াও বুকে কফ জমা সর্দি কাশি গলা ব্যথা এসব রোগ প্রতিরোধও চালতার রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও চালতার রস হাড়ের গঠন ও দাঁত ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শেষ কথাঃ চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

উপরের আলোচনা থেকে আপনারা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন চালতা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। চালতার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ভরপুর বিদ্যমান আছে। তাই চালতা কাঁচা অথবা রান্না করে খেলে শারীরিকভাবে আমরা অনেক উপকার পেয়ে থাকি।এছাড়াও চালতার পাতা ও চালতার রস আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকার করে থাকে।

চালতা খাওয়ার কারণে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ সহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য এবং হজম শক্তি বাড়ানোর জন্য চালতা অত্যন্ত চমৎকার ভূমিকা পালন করে থাকে।গর্ভাবস্থায় চালতা খেলে গর্ভে থাকা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ভালো হয়। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা পরিলক্ষিত হয় যেমন, পেট ব্যথা গ্যাস্ট্রিক ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যেতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়

comment url