দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
আমরা বর্তমানে এখন ডিজিটাল যুগে বসবাস করছি। এ যুগে এসে প্রযুক্তির ব্যবহার
ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব। তাই প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধায়
পড়ি।
তাই এই আর্টিকেলের মাধ্যমে এখন আমরা জানবো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি
ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কে। এখান থেকে আমরা আরো জানবো, প্রযুক্তি কি,
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রযুক্তির অধিক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে।
চলুন তাহলে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
- দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
- প্রযুক্তি কি
- প্রযুক্তি কি ব্যাখ্যা কর
- দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার
- দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব
- প্রযুক্তি অধিক ব্যবহারের কুফল
- শ্রেণিকক্ষে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব
- দৈনন্দিন জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
- প্রযুক্তির সুবিধার চেয়ে অসুবিধা কি বেশি
- দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কিত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- লেখকের মন্তব্যঃ দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল ও কুফল
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে এমন ভাবে ছড়িয়ে গেছে যে,এখন প্রযুক্তিবিহীন
কোনভাবেই চলা সম্ভব নয়।মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার
শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অবদান সবচেয়ে
বেশি। কিন্তু দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা কি এই
বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ
আমেরিকার স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহারের সুবিধাঃ
১. যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধনঃ বিশ্বের যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা
যত ভালো, সে দেশ তত বেশি উন্নত। আর বর্তমান যুগে প্রযুক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থার
এমন উন্নত সাধন করেছেন, যা বলে শেষ করা যাবে না। বর্তমানে মোবাইল ফোন ও
ইন্টারনেট ব্যবহার করে পুরো বিশ্বটাকে হাতের মুঠোয় রাখা যায়। অর্থাৎ
যোগাযোগ খাতে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট প্রযুক্তির একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
২. শিক্ষা খাতে উন্নতিঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নতি করার জন্য প্রযুক্তি
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে শিক্ষা
ব্যবস্থাকে চরম উন্নতির শিখরে পৌঁছানো সম্ভব। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো
প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের শিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছেন।
৩. প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় ব্যাপক উন্নতি সাধনঃ
স্বাস্থ্য সেবাকে চরম উন্নতির পর্যায়ে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার
অপরিসীম। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে বর্তমানে সারা বিশ্ব
স্বাস্থ্যসেবাকে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে রোগ
নির্ণয়ে জন্য দ্রুত ও নির্ভুল সমাধান পাওয়া যায়।
৪. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিঃ উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত এবং
সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করা সম্ভব। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে জনবল কম
প্রয়োজন হয় এবং কাজের গতি দ্রুত বাড়ানো যায়।
৫. প্রযুক্তি ব্যবসায়িক প্রবুদ্ধি ঘটায়ঃ দ্রুত ব্যবসার উন্নয়ন
ঘটানোর জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত সুবিধা জনক। আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার
করার মাধ্যমে আপনার ব্যবসাকে দ্রুত উন্নয়ন ঘটাতে পারবেন। বর্তমানে
প্রযুক্তির মাধ্যমে ই-কমার্স ব্যবসার পরিমাণ অনেক বেড়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার
করে আপনি আপনার ব্যবসাকে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে পারবেন।
৬. সময় সাশ্রয় করতে সাহায্য করেঃ প্রযুক্তি এমন একটি বিষয় যা আপনার
কাজকে অতি অল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে দেবে। অর্থাৎ আপনি যে কাজটি অনেক
সময় নিয়ে করতেন তা প্রযুক্তির মাধ্যমে সামান্য সময়ের মধ্যে করা সম্ভব।
আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনি অনেক কঠিন কাজ অল্প সময় করতে
পারবেন অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার সময় সাশ্রয় হবে।
৭. বিনোদনের সুযোগ বাড়িয়ে দেয়ঃ প্রযুক্তি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ
বিষয় যা মানুষের বিনোদনের সুযোগ স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
আগে বিনোদন নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন হতো কিন্তু
বর্তমানে আপনি ঘরে বসে অনলাইন বিনোদন অনায়াসেই ভোগ করতে পারবেন প্রযুক্তির
মাধ্যমে।
৮. নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেঃ বর্তমানে আমাদের দেশে প্রযুক্তি
ব্যবহারের মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হলো ফেসবুক, ইউটিউব সহ বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মে নতুন করে
কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে।
৯. তথ্য সংরক্ষণঃ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার তথ্য খুবই
সহজে সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী দ্রুত বের করে তা
ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি কোন তথ্য যদি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখতে
চান তাহলে আপনি প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারেন।
১০. পরিবহন ব্যবস্থা সহজতর করেঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে
পরিবহন ব্যবস্থা খুবই সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। আপনি আপনার পরিবহনের
প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে খুবই অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত অনেক কাজ
সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে করে সময় এবং খরচ দুটোই অনেক কম হবে।
১১. পরিবেশ রক্ষায় সহযোগিতা করেঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে
আপনি বিভিন্ন জিনিস উদ্ভাবন করতে পারবেন পরিবেশের ক্ষতি করা ছাড়াই। অর্থাৎ
এর আগে অনেক কিছু উদ্ভাবন করা হয়েছে যেগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি না করে অনেক
কিছু উদ্ভাবন করা সম্ভব।
১২. গবেষণা কাজ সহজ করেঃ গবেষণার কাজকে দ্রুত এবং অনেক সহজ করে
তুলেছেন প্রযুক্তি।বর্তমানে যেকোনো বিষয় গবেষণা করার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহার
করার মাধ্যমে খুবই অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে গবেষণা কাজ করা যায়। অর্থাৎ
প্রযুক্তি গবেষণার কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের অসুবিধাঃ
১. স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরঃ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য
স্মার্টফোন অথবা ভাল পিসির প্রয়োজন হয়। দীর্ঘক্ষন এসব যন্ত্রপাতির দিকে
তাকিয়ে থাকার কারণে চোখ এবং স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আরো পড়ুনঃ
আমেরিকায় স্কলারশীপ পাওয়ার উপায়
২. দক্ষতার অভাব তৈরি করেঃ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে একজন
অদক্ষ ব্যক্তি সহজেই যে কোন কাজ করতে পারে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করার
মাধ্যমে অদক্ষতার পরিমাণ দিন দিন বেড়ে চলছে।
৩. গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকিঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে আপনার
সকল তথ্য একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সাবমিট করতে হয়। যে কোন সময় যে কোন কারনে
আপনার আপনার তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে। তাই প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে
সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা ঝুকি।
৪. মানসিক প্রেসার বৃদ্ধি করেঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে
প্রত্যেকটা মানুষের মানসিক পেশার স্বাভাবিক চেয়ে বেড়ে যায়। কারণ প্রযুক্তি
ব্যবহার করার জন্য আপনাকে প্রচুর পরিমাণে স্মার্টফোন অথবা পিসির দিকে মনোযোগী
হতে হয়। আর এগুলো বেশি ব্যবহার করার কারণে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়।
৫. সামাজিক দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়ঃ প্রযুক্তি যেহেতু ঘরে বসে ব্যবহার
করা যায় তাই মানুষের সাথে কম চলাফেরা করা হয় এবং সম্পর্কের দূরত্ব বেড়ে
যায়। অর্থাৎ প্রযুক্তি ব্যবহার করার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো সামাজিক দূরত্ব
বেড়ে যায়।
৬. বেকারত্বের পরিমান বেড়ে যায়ঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে
মানুষের শ্রম শক্তি কম প্রয়োজন হয় যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেশি হয়। তাই
প্রযুক্তি ব্যবহার করার অসুবিধা হলো বেকারত্বের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৭. পরিবেশ দূষণ করেঃ যেহেতু প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে বিভিন্ন
যন্ত্রপাতি বা কলকারখানা ব্যবহার করতে হয়। তাই এক্ষেত্রে পরিবেশ দূষণ হওয়ার
সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
৮. নির্ভরতা বৃদ্ধি করেঃ যখন আমরা প্রযুক্তি নিয়মিত ব্যবহার করি তখন
আমরা সেসব যন্ত্রপাতির উপর বেশি নির্ভরশীল হই। নির্ভরশীল হওয়ার কারণে আমরা
বিভিন্ন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকি। যেমন ওইসব যন্ত্রপাতি নষ্ট হলে
ঠিক না করা পর্যন্ত আমরা কোন কাজ করতে পারে না। নির্ভরশীলতা অনেক বেড়ে যায়।
৯. আসক্তি বেড়ে যায়ঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য যেহেতু স্মার্ট
ফোন অথবা ল্যাপটপ অথবা পিসি ব্যবহার করতে হয়। তাই এসব যন্ত্রপাতির প্রতি
মানুষের আসক্তি অনেক বেড়ে যায়। কারণ এসব ডিভাইসের মাধ্যমে বিনোদন করা যায়।
তাই এক্ষেত্রে দেখা যায় মানুষের আসক্তি অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
১০. পরিবারের উপর বিরূপ প্রভাব পড়েঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে
পরিবারের অন্য কারো সাথে কথা বলার সময় খুবই কম পাওয়া যায়। তাই অতিরিক্ত
প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে পরিবারের উপর একটা বিরূপ প্রভাব পড়ে। অর্থাৎ
পরিবারের সদস্যদের সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
১১. অপরাধ কার্যক্রম বেড়ে যায়ঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে একজন
ব্যক্তি খুব সহজে একটি অপরাধ কার্যক্রম করতে পারেন। তাই প্রযুক্তি ব্যবহারের
সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো দিন দিন অপরাধ কার্যক্রম বেড়ে যাচ্ছে।
১২, নৈতিকতার অবক্ষয়ঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে মানুষের পরামর্শ
কম প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ আগে মানুষ যে কোন কাজ করতে হলে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ
লোকের পরামর্শ নিতেন। বর্তমানে প্রযুক্তির কারণে এসব আর প্রয়োজন হয় না। তাই
ছোট বড় সকলের প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে নৈতিকতার অবক্ষয় হচ্ছে।
প্রযুক্তি কি
প্রযুক্তি হলো এমন একটি বিজ্ঞান ও জ্ঞান যা মানুষের জীবনকে অতি সহজ ও উন্নত
করে তুলতে সাহায্য করে। অর্থাৎ প্রযুক্তি হলো এমন একটি মাধ্যম যা মানুষের
জীবনযাপনকে অনেক পরিবর্তন করতে সাহায্য করে। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রত্যেকটি
খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হয়ে গেছে। আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে একজন
মানুষ অতি অল্প সময়ের মধ্যে যেকোনো কাজ ও যে কোন সমস্যা সমাধান করতে পারে।
প্রযুক্তি কি ব্যাখ্যা কর
প্রযুক্তি হলো এমন একটি মাধ্যম যা মানুষের জীবনযাত্রাকে সহজ ও উন্নত করতে
সাহায্য করে থাকে। অর্থাৎ আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব সহজে অল্প সময়ে
একটি বড় ধরনের কাজ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ যদি বলা যায় আপনার হাতে যদি
একটি স্মার্টফোন থাকে তাহলে আপনি সেই স্মার্টফোনের মাধ্যমে সারা বিশ্বের
যেকোনো জায়গায় মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারবেন।
আবার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্ষেত্রে বর্তমানে শ্রমিকের খুবই অভাব। প্রযুক্তি
ব্যবহার করার মাধ্যমে অল্প শ্রমিক দিয়ে আপনি যে কোন কাজ দ্রুত শেষ করতে
পারবেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে কোন বিষয়ে খুব সহজে
শিখতে পারবেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহার করে নির্ভুলভাবে রোগ
নির্ণয় করে সমাধান দিতে পারবেন। ব্যবসা ক্ষেত্র প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত
ব্যবসার বৃদ্ধি করতে পারবেন।

দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার
বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার প্রচুর পরিমাণে বেড়ে
গেছে। এ যুগে এসে প্রযুক্তিবিহীন চলা কোনভাবেই সম্ভব নয়। আমরা চলাফেরা থেকে
শুরু করে শিক্ষা, চিকিৎসা, ব্যবসা, পরিবেশ, সামাজিক বিষয়, সকল ক্ষেত্রেই
প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকি। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমাদের একদিকে
যেমন দ্রুত কাজ সম্পন্ন হচ্ছে অন্যদিকে সময়ের সাশ্রয় হচ্ছে। চলুন তাহলে
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১. যোগাযোগের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ বর্তমানে যোগাযোগের
ক্ষেত্রে প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার রয়েছে। আপনি আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন
ব্যবহার করে যে কোন দেশের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন। আবার ইন্টারনেট ব্যবহার
করে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন।
২. শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির
ব্যবহার বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার যে কোন বিষয় জানা প্রয়োজন আপনি
খুব সহজে আপনার হাতে থাকার স্মার্ট ফোনে সার্চ দিলেই সে তথ্য পেয়ে যাবেন।
৩. চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ অতি অল্প সময়ের মধ্যে
নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় ও রোগ নিরাময়ের জন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রযুক্তির
ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
৪. গবেষণার কাজে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ গবেষণার কাজকে প্রযুক্তি অত্যন্ত
সহজ এবং সময় আশ্রয়ী করে দিয়েছেন। বর্তমানে গবেষণার কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার
করে অতি অল্প সময়ের মধ্যে বিভিন্ন কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।
৫. ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ প্রযুক্তি ব্যবহার করে
আপনার ব্যবসাটা আপনি খুবই অল্প সময়ের মধ্যে ভালো একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে
পারবেন। অর্থাৎ ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্য একটি বিষয়
হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৬. সময় সাশ্রয় এর ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারঃ যেহেতু প্রযুক্তি
ব্যবহার করে যে কোন কাজ খুবই অল্প সময়ের মধ্যে করা যায় তাই সময় সাশ্রয়ের
ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই চমৎকার ফলাফল বহন করেন।
৭. বিনোদনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারঃ আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে
ঘরে বসে অনেক ধরনের বিনোদন নিতে পারবেন। যেটা আগে আপনাকে নির্দিষ্ট একটি
জায়গায় যেয়ে নিতে হতো।
৮. তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারঃ আপনার যে কোন তথ্য
আদান প্রদান করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ
আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে খুব অল্প সময়ে সারা বিশ্বের যেকোনো জায়গায়
তথ্য আদান প্রদান করতে পারবেন।
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির প্রভাব দিন দিন অনেক বেশি ছড়িয়ে পড়ছে।
প্রযুক্তিবিহীন চলা বর্তমান যুগে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আজকাল যেকোনো
কাজ করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রযুক্তির সাহায্য নিতেই হবে। ধরুন আপনি কারো
সঙ্গে যোগাযোগ করবেন আপনি যদি ফোন ব্যবহার করেন তাহলে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে
যোগাযোগ করতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যদি তার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে চান তাহলে অনেক সময়ের ব্যাপার
হয়ে যায়। বর্তমানে মোবাইল ফোন শুধুমাত্র কথা বলার জন্য নয় এটি দিয়ে এখন
ছবি তোলা সহ বিভিন্ন ধরনের অনলাইন কাজ করা যাচ্ছে। যার ফলে একটি মাত্র
মোবাইলফোন ব্যবহার করে আমরা কথা বলার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারি।
এছাড়া বর্তমানে শিক্ষা ব্যবস্থা. চিকিৎসা ব্যবস্থা. ব্যবসায়িক ব্যবস্থা.
সামাজিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে যে কোন কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত
অপরিহার্য। আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার না করে বর্তমানে কোন কাজেই আর করতে পারবেন
না। যদিও কোন কাজ করতে চান তাহলে অনেক সময় লাগবে আপনার সেই কাজ শেষ হতে। অথচ
আপনি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অল্প সময়ের মধ্যে সে কাজগুলো করতে পারবেন।
প্রযুক্তি অধিক ব্যবহারের কুফল
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে যেমন অনেক সুফল বয়ে নিয়ে আসে, তেমনি প্রযুক্তির
অধিক ব্যবহারের আমাদের জীবনে অনেক কুফল বয়ে নিয়ে আসে। প্রযুক্তির অধিক
ব্যবহারের কারণে আপনার চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। চলুন
তাহলে জেনে নেওয়া যাক প্রযুক্তির অধিক ব্যবহার করলে আমাদের জীবনে কি কি কুফল
বয়ে নিয়ে আসে।দৃষ্টিশক্তি কমে যায়।
- মানসিক চাপ বেড়ে যায়।
- সামাজিক অবক্ষয় বেড়ে যায়।
- শিশুদের অনলাইনের প্রতি আসক্তি বাড়ায়।
- স্বাভাবিক জীবনে নৈতিক বাচক প্রভাব ফেলে।
- প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে শিশুদের স্বাস্থ্য ক্ষতি হয়।
শ্রেণিকক্ষে প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব
বর্তমান সময়ে শ্রেণীকক্ষে প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা প্রায়
অসম্ভব। শ্রেণিকক্ষে প্রযুক্তি শিক্ষার মান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কিন্তু
কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্রেণীকক্ষে প্রযুক্তি ব্যবহার ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। তথ্য
সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে অনেক সময় ভুল তথ্য সংগ্রহ করতে পারে প্রযুক্তির
মাধ্যমে। দীর্ঘক্ষণ মোবাইলে বা ল্যাপটপে চেয়ে থাকা শিক্ষার্থীর জন্য ব্যাপক
ক্ষতিকর। একদিকে যেমন চোখের ক্ষতি করে অন্যদিকে তেমন মানুষিক চাপ বাড়িয়ে
দেয়।
দৈনন্দিন জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার দিন দিন অনেক বেশি বেড়ে
চলছে। যার কারণে আমরা প্রায় প্রযুক্তির নির্ভর হয়ে পড়তেছি। তাই এখন
মাঝেমধ্যে মনে হয় প্রযুক্তিবিহীন আমাদের জীবন চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
প্রতিনিয়ত আমরা বিভিন্ন কাজে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকি। চলুন তাহলে
এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক।স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার
ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার।
- তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।
- স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করে শিক্ষা গ্রহণ করা।
- ব্যবসায় ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।
- চিকিৎসা ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।
- শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার।
- যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার ।
- ভিডিও কলের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার হয়।
- ইমেইল প্রদান করার ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার হয়।
- সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়।
- অনলাইন টিম সহযোগিতা।
- যেকোন ডকুমেন্ট শেয়ারিং।
- অনলাইন মার্কেটপ্লেস ব্যবহার করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার।
প্রযুক্তির সুবিধার চেয়ে অসুবিধা কি বেশি
আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন প্রযুক্তির সুবিধার চেয়ে অসুবিধা কি বেশি।
বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রযুক্তির সুবিধা ব্যবহার করে বিশ্বের অনেক দেশ অনেক
এগিয়ে গেছেন। প্রযুক্তির প্রচুর পরিমাণে সুবিধা আছে তেমন কিছু অসুবিধাও আছে।
যদি আমরা শুধু সুবিধাটুকু গ্রহণ করি তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো। প্রযুক্তির
সুবিধা নিতে গিয়ে কিছু কিছু অসুবিধায় পড়তে হয়।
বর্তমান যুগে প্রযুক্তিবিহীন চলা প্রায় অসম্ভব। প্রতিটি কাজে প্রযুক্তির
ব্যবহার আছে। প্রযুক্তি ছাড়া আর কোন কাজ বর্তমানে আর সম্ভব হচ্ছে না। আপনি
যে কাজ এমনিতে করতে অনেক সময় লাগবে, সেই কাজ প্রযুক্তি ব্যবহার করে অতি অল্প
সময় করতে পারবেন। তবে এতে করে আপনার শারীরিক এবং মানসিক সহ বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা হতে পারে। তবে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা বেশি অসুবিধায় কম।
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা সম্পর্কিত জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা কি কি?দ্রুত তথ্য আদান-প্রদান করা যায়
- শিক্ষার উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- ব্যবসা বাড়াতে সাহায্য করে
- সামাজিক যোগাযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে
- স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন ঘটায়
- নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করতে সাহায্য করে
- গবেষণার কাজে সাহায্য করে
- প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
দৈনন্দিন জীবনে কি কি প্রযুক্তি ব্যবহার করি?
দৈনন্দিন জীবনে আমরা প্রায় প্রতিটি কাজেই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি। যেমন
যোগাযোগ করার ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যবহার করে থাকি, ব্যবসায়িক কাজে আমরা
প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি, শিক্ষা খাতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি,
নির্ভুলভাবে রোগ নির্ধারণ ও পরামর্শ প্রদানে প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি।
গবেষণার কাজে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি। এরকম দৈনন্দিন জীবনে
প্রত্যেকটি কাজে আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকি।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে কি কি কাজে লাগে?
প্রযুক্তি আমাদের জীবনে প্রত্যেকটি কাজেই লাগে। ধরুন আপনি কারো সঙ্গে যোগাযোগ
করবেন সে ক্ষেত্রে আপনার একটি মোবাইল ফোন প্রয়োজন। আপনি কোন তথ্য
আদান-প্রদান করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার মোবাইল ফোন অথবা ল্যাপটপ অথবা
ডেস্কটপ প্রয়োজন। আপনি ব্যবসা ক্ষেত্রে অন্য দাম যাচাই করার ক্ষেত্রে
প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন। এভাবে আমাদের জীবনের প্রতিটি কাজে প্রযুক্তি
ব্যবহার হয়।
সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তির নাম কি?
বর্তমানে আমাদের দেশে যত রকম প্রযুক্তি আছে তার মধ্যে সবচেয়ে আধুনিক
প্রযুক্তি হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি।আপনি আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করে অথবা
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে যে কোন তথ্য যেকোনো সময় বিশ্বের যেকোনো জায়গায়
আদান-প্রদান করতে পারবেন।
শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির নাম কি?
- স্মার্টফোন
- কম্পিউটার
- ট্যাব
- ল্যাপটপ
- মাল্টিমিডিয়া
লেখকের মন্তব্যঃ দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল ও কুফল
দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তি ব্যবহারের সুফল ও কুফল সম্পর্কে আমরা উপরের অংশ
থেকে জানতে পারলাম। প্রযুক্তি আমাদের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি
উপাদান। প্রযুক্তবিহীন চলা বর্তমান যুগে একেবারেই অসম্ভব। বর্তমানে
প্রত্যেকটি কাজেই প্রযুক্তি ছাড়া চলে না। তবে প্রযুক্তির যেমন সুবিধা আছে
তেমন কিছু অসুবিধা আছে।
প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে যেমন অনেক সহজ তো তুলেছে। অনেক কাজ প্রযুক্তি
ব্যবহার করে আমরা দ্রুত করতে পারি। অর্থাৎ সময় অপচয় কম হয়। তেমনি
প্রযুক্তি ব্যবহার করে শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে আমরা বিভিন্ন ভাবে
ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন আমাদের চোখের ক্ষতি হয়, মানসিকভাবে চাপে থাকি।
প্রযুক্তি ব্যবহার কারণে বিভিন্ন সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url