যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সময় কখন-যুক্তরাষ্ট্রের যাওয়ার উপায় জানুন
zahid
৫ জুল, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময় কখন সম্পর্কে আপনারা অনেকেই
জানতে আগ্রহী।যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে
ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জন্য আবেদন সময় সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রোগ্রামের আবেদন প্রক্রিয়া কিছুটা
ভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণভাবে দুটি প্রধান সেশনে ভর্তি নেওয়া হয়-ফল (Fall)
এবং বসন্ত (Spring)।
ফল সেমিস্টার সাধারণত আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে শুরু হয়, আর বসন্ত সেমিস্টার
জানুয়ারিতে শুরু হয়। ফল সেমিস্টারেই অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে এবং
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় এই সময়েই সর্বাধিক স্কলারশিপ ও আর্থিক সহায়তা প্রদান
করে।
পোস্ট সূচিপত্রঃযুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময় কখন
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের জন্য সঠিক সময় জানা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সময়মতো প্রস্তুতি নেওয়া না গেলে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ
পাওয়া কঠিন হতে পারে। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তিনটি ধাপে আবেদন গ্রহণ
করে-Fall, Spring, এবং কিছু ক্ষেত্রে Summer সেশনেও। সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ সেশন হলো Fall semester, যার ক্লাস শুরু হয় আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে।
এই সেশনের জন্য আবেদন করার শেষ সময় সাধারণত আগের বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে পড়ে। যেমন, ২০২৬ সালের Fall সেশনের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হতে
পারে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৬ সালের জানুয়ারি
পর্যন্ত।যারা Spring semester-এ ভর্তি হতে চায়, তাদের ক্লাস শুরু হয় জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে, এবং এই
সেশনের আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ সাধারণত আগের বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে হয়ে থাকে।
আবেদনের প্রক্রিয়াটি সাধারণত অনেক ধাপে সম্পন্ন হয়-বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই,
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ (যেমন: ট্রান্সক্রিপ্ট, TOEFL/IELTS স্কোর, SAT/ACT,
রেকমেন্ডেশন লেটার, ইত্যাদি), SOP লেখা, এবং অবশেষে অনলাইনে আবেদন জমা দেওয়া।
তাই এই পুরো প্রক্রিয়াটি শুরু করা উচিত কমপক্ষে ১২-১৫ মাস আগে থেকে, যাতে পর্যাপ্ত সময়ে প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
যত আগে শুরু করা যায়, তত ভালো সুযোগ তৈরি হয় স্কলারশিপ পাওয়ার এবং পছন্দের
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির। অতএব, সময়ের প্রতি সচেতনতা ও পরিকল্পিত প্রস্তুতি এই
দীর্ঘ ও প্রতিযোগিতামূলক যাত্রায় সফলতার চাবিকাঠি।
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া কখন শুরু হয়?
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ এবং ধাপে ধাপে চলে,
তাই এটি কখন শুরু হয় - সে সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা খুবই জরুরি। সাধারণভাবে,
ভর্তি প্রক্রিয়ার আনুষ্ঠানিক শুরু বলতে আমরা যেটা বুঝি, সেটি হলো
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবেদনপত্র গ্রহণের সময়। এই সময়টা সাধারণত Fall সেমিস্টারের জন্য শুরু হয় আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে, তবে তার প্রস্তুতি শুরু করতে হয় আরও অনেক আগে।
একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে, অন্তত এক থেকে দেড় বছর আগে থেকেই পরিকল্পনা শুরু করা দরকার।ধরা যাক, তুমি ২০২৬ সালের আগস্টে ক্লাস
শুরু করতে চাও। সেক্ষেত্রে তোমার প্রস্তুতি শুরু করা উচিত ২০২৪ সালের মাঝামাঝি
থেকেই। এই সময়ে তোমাকে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন, টেস্ট (যেমন TOEFL, IELTS, SAT)
দেওয়া, রেফারেন্স লেটার সংগ্রহ, স্টেটমেন্ট অব পারপাস লেখা -এসব কাজ শুরু করতে
হবে।
বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় Fall সেমিস্টারের জন্য আবেদন নেয় নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে। আবার কেউ কেউ Early Decision বা Early Action প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আরও আগেই
(অক্টোবরের মধ্যে) আবেদন নেওয়া শুরু করে।তাই, ভর্তি প্রক্রিয়া শুধুমাত্র আবেদন
জমা দেওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি ধাপে ধাপে পরিকল্পিত প্রস্তুতির
অংশ।
যেকোনো শিক্ষার্থী যদি যথাসময়ে প্রস্তুতি শুরু করে এবং প্রতিটি ধাপ বুঝে এগিয়ে
যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে একটি মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া অনেকটাই
সহজ ও সম্ভবপর হয়ে ওঠে।
Fall সেমিস্টারের জন্য আবেদনের সময়সীমা
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ভর্তি হতে চায়, তাদের
বেশিরভাগই Fall সেমিস্টার বেছে নেয়। কারণ এই সেমিস্টারে সর্বাধিক কোর্স, স্কলারশিপ এবং ভর্তি সুযোগ
থাকে। Fall সেমিস্টার সাধারণত শুরু হয় আগস্ট বা সেপ্টেম্বর মাসে, তবে এর জন্য আবেদন জমা দেওয়ার সময়সীমা তার অনেক আগেই শেষ হয়ে যায়।
বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হয় নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে।
কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আবার Early Action বা Early Decision অপশন দেয়, যেগুলোর ডেডলাইন আরও আগে, অর্থাৎ অক্টোবরের মাঝামাঝি বা
নভেম্বরের শুরুতে।আপনি যদি ২০২৬ সালের Fall সেমিস্টারে ভর্তি হতে চাও, তাহলে
তোমার আবেদন জমা দেওয়ার ডেডলাইন হবে ২০২৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত।
তবে এটাই চূড়ান্ত নয় -কারণ প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সময়সীমা থাকে। কেউ
কেউ Rolling Admission পদ্ধতিতে আবেদন গ্রহণ করে, যেখানে নির্দিষ্ট কোনো শেষ তারিখ নেই, কিন্তু
যত তাড়াতাড়ি আবেদন করবে, ততই সুযোগ বেশি থাকবে।Fall সেমিস্টারের জন্য আবেদন
করতে চাইলে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে আরও আগে - যেমন TOEFL বা IELTS স্কোর নেওয়া,
রেকমেন্ডেশন লেটার জোগাড় করা, SOP (Statement of Purpose) লেখা, এবং অন্যান্য
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি।
এ কারণে অনেকেই ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করে কমপক্ষে এক বছর আগে থেকে।সময়মতো আবেদন করা এবং প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ডেডলাইন
জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটু দেরি মানেই সুযোগ হারানো। তাই পরিকল্পিতভাবে এগোনোই
সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
Spring সেমিস্টারের জন্য আবেদনের শেষ তারিখ
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য শুধু Fall সেমিস্টার
নয়, Spring সেমিস্টারও অনেক শিক্ষার্থীর জন্য ভালো একটি বিকল্প। বিশেষ করে যারা প্রস্তুতির জন্য
কিছুটা বাড়তি সময় চায়, তারা অনেক সময় Spring সেমিস্টার বেছে নেয়। Spring
সেমিস্টারের ক্লাস সাধারণত শুরু হয় জানুয়ারি মাসে, তাই এর আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয় আগের বছরের মাঝামাঝি সময়েই।
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে Spring সেমিস্টারের জন্য আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ পড়ে আগস্ট থেকে
অক্টোবরের মধ্যে। তবে সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আলাদা হয়ে থাকে, তাই
নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তারিখ যাচাই করা গুরুত্বপূর্ণ।আপনি
যদি ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে Spring সেমিস্টারে ভর্তি হতে চাও, তাহলে তোমার আবেদন
জমা দেওয়ার ডেডলাইন হতে পারে ২০২৫ সালের আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে।
এই সময়সীমার মধ্যে শুধু অনলাইন আবেদন ফর্ম পূরণ করলেই চলবে না, বরং TOEFL বা
IELTS স্কোর, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, রেফারেন্স লেটার, এবং SOP (Statement of
Purpose) সহ সমস্ত কাগজপত্র ঠিকঠাকভাবে জমা দিতে হবে।Spring সেমিস্টারের একটি
সুবিধা হলো প্রতিযোগিতা তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম থাকে, কারণ বেশিরভাগ শিক্ষার্থী
Fall সেশনের জন্য আবেদন করে।
তবে কোর্স এবং স্কলারশিপের সংখ্যা কিছুটা সীমিত হতে পারে। তাই যে যত আগে আবেদন
করে, তার সুযোগ তত বেশি।Spring সেমিস্টারে ভর্তি হতে হলে সময়মতো পরিকল্পনা শুরু
করে আবেদন জমা দেওয়াই সফলতার চাবিকাঠি।
Early Action এবং Early Decision এর সময়সূচি
যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় Early Action (EA)
এবং Early Decision (ED) নামে দুটি আলাদা ধরণের আগাম আবেদন পদ্ধতি রয়েছে। এই
অপশনগুলো মূলত তাদের জন্য, যারা নিজেদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করে
ফেলেছে এবং যারা আগেভাগেই আবেদন করতে চায়। সাধারণত EA এবং ED-দুটোরই আবেদন
ডেডলাইন পড়ে প্রতি বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, অনেক সময় নভেম্বর ১
তারিখে। সাধারণত EA এবং ED-দুটোরই আবেদন ডেডলাইন পড়ে প্রতি বছরের নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে, অনেক সময় নভেম্বর ১ তারিখে।
তবে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সময়সীমা অক্টোবরের শেষ ভাগে পর্যন্তও হতে পারে।Early Decision এমন এক ধরণের আবেদন, যেখানে তুমি প্রতিশ্রুতি দাও যে যদি তোমাকে সেই
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নেওয়া হয়, তাহলে তুমি সেখানেই পড়বে-অন্য কোথাও নয়।
অর্থাৎ এটি বাধ্যতামূলক (binding)। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করতে হয়।
অন্যদিকে, Early Action এর আবেদন বাধ্যতামূলক নয়-তুমি একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে EA-তে আবেদন করতে
পারো এবং পরে সিদ্ধান্ত নিতে পারো কোথায় পড়বে।EA ও ED-এর আরেকটি বড় সুবিধা
হলো, তাড়াতাড়ি ফলাফল পাওয়া যায়-অনেক সময় ডিসেম্বর মাসেই জানিয়ে দেয়া হয় তুমি ভর্তি হয়েছ কি না। এতে করে মানসিক চাপ অনেক কমে
যায়।
তবে মনে রাখতে হবে, যেহেতু আবেদন আগে করতে হয়, তাই সকল কাগজপত্র, টেস্ট স্কোর, এবং রেফারেন্স লেটার আগেভাগেই প্রস্তুত রাখতে
হয়।যাদের প্রস্তুতি ঠিকঠাক এবং লক্ষ্য পরিষ্কার, তাদের জন্য EA ও ED চমৎকার
সুযোগ-তবে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
Rolling Admission-এর সুবিধা ও সময়সীমা
যুক্তরাষ্ট্রে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ভর্তি প্রক্রিয়ায় Rolling Admission পদ্ধতি ব্যবহার করে, যা অন্যান্য ধরণের আবেদনের তুলনায় অনেক বেশি নমনীয়।
Rolling Admission-এ কোনও নির্দিষ্ট ডেডলাইন থাকে না বরং আবেদন গ্রহণ করা
হয় একটি নির্দিষ্ট সময়কাল জুড়ে, যতক্ষণ না পর্যন্ত আসন পূর্ণ হয়ে যায়।
সাধারণত এই প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রেসিডিং বছরের সেপ্টেম্বরে এবং চলতে পারে পরের বছরের মে-জুন পর্যন্ত, যদিও জনপ্রিয় বা চাহিদাসম্পন্ন প্রোগ্রামগুলোর আসন অনেক আগেই পূর্ণ হয়ে যেতে
পারে।এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো-তাড়াতাড়ি আবেদন করলে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়। অনেকে এক সপ্তাহের মধ্যেই ভর্তি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পেয়ে যায়, যা ছাত্রদের
মানসিক চাপ কমাতে দারুণ সাহায্য করে।
আরেকটি সুবিধা হলো, যাদের অন্যান্য ডেডলাইনের মধ্যে আবেদন করা সম্ভব হয়নি বা
যারা পরে পড়াশোনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তারা Rolling Admission-এর মাধ্যমে সুযোগ
পেতে পারে।তবে এই সুবিধার পাশাপাশি কিছু সতর্কতার বিষয়ও আছে। যেহেতু আসন সীমিত,
তাই কেউ যদি দেরি করে আবেদন করে, তবে যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জায়গা না-ও পেতে
পারে।
তাছাড়া কিছু কিছু স্কলারশিপ রোলিং অ্যাডমিশন এর মধ্যে পড়ে না, কারণ সেগুলোর
প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা সুনির্দিষ্ট সময় সীমা নির্ধারণ করা থাকে। যেসব স্টুডেন্ট
প্রয়োজন অনুযায়ী ও সময়মাফিক প্রস্তুতি নিতে পারেননি তাদের জন্য উত্তম হলো
Rolling Admission । তবে দেরি না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবেদন করাই বুদ্ধিমানের
কাজ।
ডেডলাইন মিস না করা
যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করতে গেলে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াই নয়,
বরং স্কলারশিপ এবং ফিনান্সিয়াল এইডের জন্য আবেদন করাও অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। অনেক শিক্ষার্থীর জন্য এই আর্থিক সহায়তা পাওয়া মানেই স্বপ্নের
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার পথ খুলে যাওয়া। কিন্তু এই সহায়তা পেতে হলে সময়মতো আবেদন
করাটা সবচেয়ে বড় শর্ত।
সাধারণভাবে বলা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের ডেডলাইনের আশেপাশেই স্কলারশিপ ও ফিনান্সিয়াল এইডের
জন্যও আবেদন জমা দিতে হয়। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বলে দেয় যে, যদি তুমি ভর্তি আবেদনের সময়েই এইড বা
স্কলারশিপের জন্য আলাদাভাবে আবেদন না করো, তাহলে পরে আর সুযোগ থাকবে না।বিশেষ করে
যারা Fall সেমিস্টারের জন্য আবেদন করছে, তাদের অনেক সময় নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ফাইনান্সিয়াল এইড ফর্ম জমা দিতে হয়।
তবে আবার বেশকিছু ক্ষেত্রে FAFSA (Free Application for Federal Student Aid) বা CSS Profile এর মত নির্দিষ্ট ধরনের ফরম পূরণ করতে হয়, যেগুলোর নির্দিষ্ট সময়সীমা
নির্ধারন থাকে। সকল আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের
নিজস্ব ফাইনান্সিয়াল এইড ফর্মও থাকে।যদি কেউ স্কলারশিপ বা সাহায্যের ব্যাপারে
সিরিয়াস হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদনের কমপক্ষে ২-৩ মাস আগেই খোঁজখবর নিতে শুরু করা
উচিত।
কারণ অনেক স্কলারশিপে অতিরিক্ত এসসেও (essay), সিভি বা রেফারেন্স চিঠি জমা দিতে
হয়।স্কলারশিপ ও ফিনান্সিয়াল এইড পাওয়া সম্ভব - যদি তুমি ঠিক সময়ে সঠিকভাবে
প্রস্তুতি নাও এবং ডেডলাইনগুলো মিস না করো। দেরি করলে সুযোগ হাতছাড়া হওয়াটাই
স্বাভাবিক।
Application প্রস্তুতি কখন শুরু করা উচিত?
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন অনেকেরই থাকে, কিন্তু এই স্বপ্ন সফল
করতে হলে সবচেয়ে জরুরি হলো সঠিক সময়ে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা। অনেকেই ভাবেন, শেষ বছরে পড়ে আবেদন করলেই হবে, কিন্তু বাস্তবতা একটু আলাদা।
একজন শিক্ষার্থী যদি ধরেন Fall সেমিস্টারে ভর্তি হতে চান, তাহলে তার আবেদন করতে হবে আগের বছরের নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে।
তাই প্রস্তুতি শুরু করা উচিত অন্ততপক্ষে ৬ মাস বা এক বছর আগে থেকে , কোন কোন সময় ১.৫ বছর আগেও। এই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ করতে হয়-বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে বের করা, দরকারি
টেস্ট (TOEFL, IELTS, SAT, GRE ইত্যাদি) দেওয়া, একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট তৈরি
করা, রেফারেন্স লেটার জোগাড় করা, SOP বা Personal Statement লেখা-এগুলো একদিনে
বা এক সপ্তাহে করা সম্ভব নয়।
আবার কেউ কেউ স্কলারশিপ বা ফিনান্সিয়াল এইডের জন্যও আবেদন করে, যেগুলোর জন্য
বাড়তি ডকুমেন্ট বা রচনাও দরকার হয়।সবচেয়ে ভালো হয় যদি কলেজ লাইফের ২য় বা ৩য় বছরে থাকতেই কেউ Application নিয়ে পরিকল্পনা শুরু করে। এতে করে ধাপে ধাপে কাজ
করা যায় এবং শেষ মুহূর্তের ঝামেলা এড়ানো যায়।
অনেক সময় দেখা যায়, কেউ স্কোর ভালো করেছে, কিন্তু SOP ভালোভাবে লেখেনি, বা
রেফারেন্স সময়মতো আসেনি-ফলে পুরো আবেদন দুর্বল হয়ে গেছে।অতএব, যাদের লক্ষ্য
পরিষ্কার, তাদের উচিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রস্তুতি শুরু করা। কারণ সুযোগ
আসবেই-তবে প্রস্তুতি না থাকলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো যাবে না।
ডেডলাইন মিস করলে করণীয় কী?
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার সময় ডেডলাইন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে অনেক সময় এমন
হয়-সবচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও কেউ হয়তো শেষ তারিখটা মিস করে ফেলল। এখন প্রশ্ন
হচ্ছে, তখন কী করা যায়? একদম হতাশ হওয়ার কিছু নেই, কারণ কিছু বিকল্প পথ সবসময়
খোলা থাকে।
প্রথমেই যেটা করা দরকার, সেটা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন অফিসে সরাসরি যোগাযোগ করা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় নমনীয় হয়-বিশেষ করে যদি আবেদনকারী ভালভাবে ব্যাখ্যা
করতে পারে কেন দেরি হয়েছে। কখনো কখনো তারা অতিরিক্ত কিছুদিন সময় দিতে পারে বা
দেরিতে আবেদন গ্রহণ করে। তাই ডেডলাইন মিস করার পর চুপ করে বসে থাকার চেয়ে সরাসরি
ইমেইল বা ফোনে তাদের জানানোই ভালো।
তারপর, খুঁজে দেখতে হবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে Rolling Admission আছে, সেগুলোর আবেদন এখন পর্যন্ত খোলা থাকতে পারে। Rolling Admission এর মানে হলো,
সুনির্দিষ্ট শেষ তারিখ না থাকলেও, যত তারাতারি আবেদন করবে তত ভালো। এতে নতুন করে
আরেকটি সুযোগ তৈরি হতে পারে।তাছাড়া, তুমি চাইলে Spring সেমিস্টারের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারো, যেখানে ক্লাস শুরু হয় জানুয়ারিতে।
অনেক সময় মানুষ Fall সেমিস্টারে ভর্তি না হতে পেরে Spring-এ গিয়ে সফল
হয়েছে।একবার ডেডলাইন মিস মানেই সবকিছু শেষ-এমন নয়। ধৈর্য ধরে, সচেতনভাবে বিকল্প
খুঁজে এগোলে সামনে নতুন দরজা খুলবেই। গুরুত্বপূর্ণ হলো হতাশ না হয়ে দ্রুত
সিদ্ধান্ত নেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উপায়
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার অনেকগুলো উপায় রয়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি সহজ উপায় হলো
পড়াশোনার করার জন্য, কাজের উদ্দেশ্যে, অথবা অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। তবে
অনেক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ভিসা (এফ-১) নিয়ে আমেরিকায়
যান। আবার আমাদের মধ্যেই অনেকেই বিভিন্ন চাকরির সুযোগ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে
যে থাকেন এছাড়াও সাধারণ উপায়ে ডিবি লটারি অথবা নিজস্ব অর্থায়নের
যুক্তরাষ্ট্রে যেয়ে থাকেন।
তবে যেভাবেই যাওয়া হোক না কেন, সঠিক কাগজপত্র, ইংরেজিতে দক্ষতা এবং সৎ উদ্দেশ্য
থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার নিয়মগুলো জটিল হতে পারে,
তাই ভালোভাবে তথ্য জেনে ও পরিকল্পনা করে এগোনো জরুরি।
স্টুডেন্ট ভিসা (F-1): বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিশ্চিত হলে এই ভিসা পাওয়া যায়।
ওয়ার্ক ভিসা (H-1B): চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান স্পন্সর করলে আবেদন করা যায়।
ডিভি লটারি: প্রতি বছর কিছু সংখ্যক মানুষকে এলোমেলোভাবে নির্বাচিত করে গ্রিন
কার্ড দেওয়া হয়।
ফ্যামিলি স্পন্সরশিপ: যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত আত্মীয় যদি স্পন্সর করে তবে আবেদন করা যায়।
ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা: TOEFL বা IELTS পরীক্ষার স্কোর অনেক ক্ষেত্রেই প্রয়োজন হয়।
আবেদনের সময় সততা: ভুল তথ্য দিলে ভিসা বাতিল বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পেতে পারেন।
FAQ/সাধারণ প্রশ্নোত্তর
প্রশ্নঃ যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সেরা সময় কখন?
উত্তরঃ সাধারণত আগস্ট থেকে জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করা হয়। ফলো করতে হয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দিষ্ট ডেডলাইন।
প্রশ্নঃ "Early Decision" ও "Regular Decision" এর পার্থক্য কী?
উত্তরঃ Early Decision হলো বাধ্যতামূলক ভর্তি, আর Regular Decision-এ অন্যান্য
অপশন খোলা থাকে।
প্রশ্নঃ SAT/ACT কি এখনও প্রয়োজন?
উত্তরঃ অনেক বিশ্ববিদ্যালয় এখন "test-optional", তবে কিছু এখনও চায়।
প্রশ্নঃ TOEFL বা IELTS কি বাধ্যতামূলক?
উত্তরঃ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সাধারণত TOEFL বা IELTS প্রয়োজন হয়।
প্রশ্নঃ আবেদন করার জন্য কি GPA দরকার?
উত্তরঃ হ্যাঁ, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি ন্যূনতম GPA প্রয়োজন থাকে।
প্রশ্নঃ Statement of Purpose (SOP) কেন প্রয়োজন?
উত্তরঃ এটি তোমার লক্ষ্য, আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রকাশ করে।
প্রশ্নঃ কতোটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে আবেদন করা যায়?
উত্তরঃ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায়, সাধারণত ৫–১০টি করা হয়।
প্রশ্নঃ আর্থিক সহায়তা বা স্কলারশিপের জন্য কখন আবেদন করতে হয়?
উত্তরঃ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে একসাথে বা আলাদাভাবে স্কলারশিপে আবেদন করতে হয়।
প্রশ্নঃ কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করব?
উত্তরঃ কোর্স, ফান্ডিং, অবস্থান ও র্যাংকিং বিবেচনা করে নির্বাচন করা উচিত।
লেখকের মন্তব্যঃযুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময় কখন
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সময় সাধারণত আগষ্ট থেকে জানুয়ারির
মধ্যে পড়ে, তবে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে ভিন্ন হতে পারে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে
"Early Action" ও "Early Decision" এর ডেডলাইন থাকে নভেম্বরের শুরুতে, যেখানে
"Regular Decision" সাধারণত জানুয়ারির মধ্যে শেষ হয়। আমার মতে, আবেদন
প্রক্রিয়া অনেক প্রস্তুতির দাবি করে, যেমন টেস্ট স্কোর, রেফারেন্স লেটার, এবং
ব্যক্তিগত বিবৃতি। তাই দেরি না করে আগেভাগেই কাজ শুরু করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রার্থী
যদি সময়মতো পরিকল্পনা না করে, তবে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সুযোগ হাতছাড়া হতে পারে।
লেখক এ কারণে সময় মেনে আবেদন করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
প্রিয় পাঠক, আশা করি এ কন্টেনটি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে এবং এই কনটেন্টের
দ্বারা আপনারা উপকৃত হতে পারবেন।যদি এই কন্টেন্টের দ্বারা আপনারা উপকৃত হয়ে
থাকেন তবে এই কনটেন্টটি আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের নিকট শেয়ার করতে
পারেন যাতে তারা এই কন্টেনিটি পড়ে উপকৃত হতে পারে।এছাড়াও প্রতিদিন আপডেট ও
নতুন নতুন তথ্য পেতে নিয়মিত আমাদের সাইটে ভিজিট করুন।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url