কলার থোড় খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার থোড় রান্নার রেসিপি
বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ একটি খাবারের নাম হল কলার থোড়। কলার থোর
খাওয়ার আছে হাজারো উপকারিতা ও অপকারিতা। কলার থোর খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায়
এবং কি কি অপকার হয় চলুন এই বিষয়ে যাবতীয় সঠিক তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা আরো যা জানতে পারবেন, কলার থোর
রান্নার রেসিপি, কলা গাছের থোর খেলে কি হয়, থোরের রস খাওয়ার নিয়ম ও থোরের রসের
কি কি উপকারিতা আছে। যাবতীয় সকল সঠিক তথ্য বিস্তারিত জানতে এই আর্টিকেলটি শেষ
পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা - কলার থোর রান্নার রেসিপি
- কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- কলার থোর রান্নার রেসিপি
- কলা গাছের থোর খেলে কি হয়
- থোরের রস খাওয়ার নিয়ম
- থোরের রসের কি কি উপকারিতা আছে
- কলা গাছে কি কি ভিটামিন আছে
- থোরের রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি
- কলার থোরে কি থাকে
- কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
- লেখকের মন্তব্যঃ কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কলার থোর এর মধ্যে আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান
থাকার কারণে কলার থোর খাওয়ার ফলে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকি। বিশেষ
করে আমরা শরীরের বিভিন্ন রোগ ব্যাধির হাত থেকে আমরা রক্ষা পায়। তবে কলার থোর
খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা আছে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলার
থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে যাবতীয় সকল সঠিক তথ্য।
কলার থোর খাওয়ার উপকারিতাঃ
কলার থোর খাওয়ার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকি যেমন-কলার থোর
খাওয়ার কারণে কিডনির পাথর দূর হয়ে যায়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থাকে, শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় এরকম বিভিন্ন ধরনের উপকার পেয়ে থাকি। কলার থোরের
মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। কলার থোর খেলে আরো কি কি উপকার
পাওয়া যায় চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. কিডনির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ
নিয়মিত কলার থোর খাবার ফলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিডনিজনিত
বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন নিয়মিত এক গ্লাস করে কলার থোরের
জুস খেতে হবে। কলা গাছের কান্ডে অনেক পরিমান পটাসিয়াম বিদ্যমান আছে। যার কারণে
কিডনিতে ক্যালসিয়াম ক্রিস্টাল তৈরি হওয়া রোধ হয়।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় কদবেল খাওয়ার উপকারিতা
২. ওজন কমাতে সাহায্য করেঃ কলার থোড়ে প্রচুর
পরিমাণে আশ বিদ্যমান আছে অপরদিকে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। যার কারণে কলার থোর
নিয়মিত খাওয়ার ফলে ওজন কমতে সাহায্য করে।
৩. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ
কলার থোরে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের পাশাপাশি পটাসিয়াম ও ভিটামিন বি-৬ পর্যাপ্ত
পরিমাণে উপস্থিত থাকে। এই দুটি উপাদান থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
থাকে। এছাড়াও ভিটামিন বি-৬ ইনসুলিন ও হিমোগ্লোবিন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৪. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করেঃ যারা
দীর্ঘদিন থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য উত্তম সমাধান হতে
পারে কলার থোর। কারণ কলার থোরের মধ্যে যে উপাদান বিদ্যমান আছে সেগুলো মানুষের
কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৫. শরীরের টক্সিন দূর করতে সাহায্য করেঃ কলার
থোর শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। যার ফলে
নিয়মিত কলার থোর খাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বিশেষ করে কিডনির পাথর প্রাকৃতিকভাবে দূর করতে কলার থোরের ভূমিকা অপরিসীম।
৬. এসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করেঃ
আপনার শরীরে যদি অত্যাধিক পরিমাণে এসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে
আপনার জন্য উত্তম সমাধান হবে কলার থোর। এই ধরনের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত আপনাকে
কলার থোরের শরবত খেতে হবে।
৭, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেঃ
কলার থোরে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি
পুষ্টি উপাদান হলো ফাইবার। ফাইবার মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলার থোর খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
৮. হজম শক্তি বেড়ে যায়ঃ কলার থোর মানুষের
হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আর হজম শক্তি বেড়ে যাওয়ার কারণে পেটের ভেতরের
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর হয়ে যায়। তাই হজম শক্তি বাড়াতে নিয়মিত কলার থোর
খেতে পারেন।
৯. শরীরকে ডিটক্স করতে সাহায্য করেঃ নিয়মিত
কলার থোর খাওয়ার কারণে শরীর থেকে বজ্র পদার্থ বেরিয়ে যায় বা টক্সিন জাতীয়
পদার্থ বেরিয়ে যায়। যার ফলে আপনার পাকস্থলী হয় খুবই শক্তিশালী। কারণ কলার
থোরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বিদ্যমান আছে।
১০. সুগার লেভেল কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেঃ
কলার থোর এমন এক ধরনের খাবার যে খাবার নিয়মিত খাবার ফলে শরীরের সুগার লেভেল
নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ থাকার কারণে ডায়াবেটিস সহ অন্যান্য
রোগ শরীর থেকে দূর হয়ে যায়।
১১. ফ্যাট নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঃ যদি আপনি নিয়মিত কলার থোর খান তাহলে আপনার শরীর থেকে ফ্যাট জাতীয়
উপাদান নিঃসরণ হয়ে যায়।
১২. রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করেঃ কলার
থোরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আয়রন উপস্থিত থাকে। যার ফলে নিয়মিত করার থার খেলে
শরীরে প্রচুর পরিমাণে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয় এবং প্রচুর পরিমাণে রক্ত তৈরি হয়। আর
এ কারণে শরীর থেকে রক্তস্বল্পতা দূর হয়ে যায়।
১৩. বুক জ্বালাপোড়া নিয়ন্ত্রণ করেঃ নিয়মিত কলার থোর খাওয়ার কারণে বুক
জ্বালাপোড়া সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১৪. পেট ব্যথা জনিত সমস্যা দূর হয়ঃ যদি আপনি দীর্ঘদিন থেকে পেট ব্যথা
জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আপনার জন্য উত্তম সমাধান হতে পারে কলার থোর। কারণ
কলার থোর নিয়মিত খাওয়ার ফলে পেট ব্যথা জনিত সমস্যা দূর হয়।
১৫. চর্বি নিঃসরণে সহযোগিতা করেঃ রক্ত বা কোষে জমে থাকা চর্বি নিঃসরণে
কলার থোর খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১৬. দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করেঃ কলার থলের মধ্যে ভিটামিন এ
বিদ্যামান থাকার কারণে নিয়মিত কলার থোর খেলে দৃষ্টি শক্তি স্বাভাবিকের চেয়ে
বেড়ে যায়।
কলার থোর খাওয়ার অপকারিতা
কলার থোর বিভিন্ন পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হলেও এর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু কিছু
অপকারিতা লক্ষ্য করা যায়। এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে তার যেমন উপকারিতা আছে তেমন
কিছু অপকারিতা আছে। তাই কলার থোর খাওয়ার আগে আমাদের জানতে হবে কলার থোর খেলে
আমাদের কি কি অপকারিতা হতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলার থোর খাওয়ার
অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
আরো পড়ুনঃ
গর্ভাবস্থায় মিষ্টিকুমড়া খাওয়ার উপকারিতা
কলার থোর খাওয়ার অপকারিতাঃ
- অতিরিক্ত কলার থোর খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের অতিরিক্ত কলার থোর খেলে সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
- কলার থোর খাওয়ার কারণে এলার্জি বেড়ে যেতে পারে।
- পটাশিয়াম বেশি থাকায় কিডনিজনিত সমস্যা বাড়তে পারে।
- বেশি কলার থোর খেলে বদ হজনিত সমস্যা হতে পারে।
কলার থোর রান্নার রেসিপি
কলার থোরের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা অনেক কিছু জানলাম কিন্তু কলার থোর রান্নার রেসিপি কি, এ সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। কলার থোর বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়
এর মধ্যে একটি উত্তম পদ্ধতি হচ্ছে রান্না করে খাওয়া। যদি সঠিকভাবে রান্না করে
খাওয়া যায় তাহলে একদিকে খেতেও যেমন সুস্বাদু তেমনি শরীরের রোগ নিরাময় সহজেই
হয়ে যায়। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলার থোর রান্নার রেসিপি সম্পর্কে।
কলার থোর রান্নার জন্য যেসব উপকরণ প্রয়োজনঃ
- কলার থোর ১টি
- কাঁচামরিচ ৭টি
- আলু ২টি
- সরিষা বাটা পরিমান মত
- শুকনা মরিচ ১টি
- লবণ ৪ চামচ
- সরিষার তেল ৫ চামিচ
- হলুদ ৩ চামচ
- জিরা গুড়া ১ চামচ
যেভাবে রান্না করবেনঃ
- আলু গুলোকে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে এবং ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর কাঁচা মরিচকে কেটে নিতে হবে।
- কলার থোরকে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে এবং ধুয়ে নিতে হবে।
- উক্ত কলার থোরের ভিতরে লবণ দিয়ে মেখে নিতে হবে।
- মাখানো হয়ে গেলে এভাবে দশ মিনিট রেখে দিতে হবে।
- লবন দেওয়ার কারণ হলো যেন থোর গুলো শক্ত হয়ে না যায়।
- এরপর কলার থোর গুলোকে ভালো করে আবার ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর ফ্রাই পেন অথবা কড়াই চুলায় বসিয়ে এর ভেতর তেল দিতে হবে।
- তেল মোটামুটি গরম হলে কেটে রাখা আলুগুলো ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
- আলুগুলো ভাজা হয়ে গেলে একটি পাত্রে তুলে রাখতে হবে।
- এরপর কড়াইয়ের মধ্যে আরেকটু তেল দিতে হবে এবং শুকনো মরিচ ও সরিষা বাটা গরম তেলে ভেজে নিতে হবে।
- শুকনো মরিচ ও সরিষা বাটা মোটামুটি ভাজা হয়ে গেলে এর মধ্যে ধুয়ে রাখা কলার থোর দিয়ে দিতে হবে।
- এরপর প্যানে ভেজে রাখা আলুর পিচ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে হবে।
- পরবর্তীতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ ও হলুদ দিতে হবে।
- এসব কিছু দেওয়ার পরে কলার থোর ভালোভাবে ভেজে নিতে হবে।
- এরপর কড়াইয়ের মধ্যে একটু পানি দিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে।
- পানি দেওয়ার পর ভালো হবে সিদ্ধ হয়ে গেলে অর্থাৎ এর মধ্যে ঝোল কমে গেলে তাতে পরিমাণ মতো জিরা গুড়া দিতে হবে।
- জিরে গুড়া দেওয়ার পর কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে তারপর কলার থোরের ঘন্টো নামিয়ে ফেলতে হবে।
- হয়ে গেল সুস্বাদু কলার থোরের ঘন্ট।
কলা গাছের থোর খেলে কি হয়
কলা গাছের থোর খেলে কি হয় এই বিষয়ে আপনারা অনেকেই জানতে চান। কলা গাছের থোর
অত্যন্ত পুষ্টি উপাদান সম্পন্ন একটি প্রাকৃতিক খাবার। যে খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের
শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ বেরিয়ে যায় এবং আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে
মুক্তি পাই। এছাড়াও কলার থোর খেলে আমরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়। চলুন তাহলে জেনে
নেওয়া যাক কলা গাছের থোর খেলে কি হয়।
আরো পড়ুনঃ
সজনে ডাটার উপকারিতা ও অপকারিতা
- ওজন কমে যায়
- শরীর থেকে চর্বি দূর হয়ে যায়
- সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে
- কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা দূর হয়
- পেট ব্যাথা ভালো হয়ে যায়
- দৃষ্টিশক্তি বেড়ে যায়
- রক্তস্বল্পতা কমে যায়
- বুক জ্বালাপোড়া করে না
- শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বেড়িয়ে যায়
- হজম শক্তি বেড়ে যায়
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়
- গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা দূর হয়
- পাকস্থলির বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে
- কিডনির পাথর দূর হয়ে যায়
থোরের রস খাওয়ার নিয়ম
কলা গাছের থোরের রস আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার, যে খাবার
খাওয়ার কারণে আমাদের শরীর থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ বেড়িয়ে যায়। আমরা
বিভিন্ন রোগের হাত থেকে খুব সহজেই রক্ষা পায়। যদি আপনি নিয়মিত কলা থোরের রস খান
তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবেন। তবে এক্ষেত্রে
আপনাকে কলার থোরের রস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে হবে।
কলার থোরের রস খাওয়ার নিয়মঃ
- কলার থোড়ের রস খাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে কলার থোর ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে।
- এরপর কলার থোরকে ভালোভাবে কুচি কুচি করে কেটে দিতে হবে।
- কুচি কুচি করে কাঁটা হয়ে গেলে যেগুলো অংশ শক্ত এবং পুরু সেগুলোকে আলাদা করতে হবে।
- এরপর কুচি করে কেটে রাখা কলার থোর ভালোভাবে পিষে রস করে এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খেতে হবে।
- তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে ছেঁকে নিতে হবে।
- তবে কলার থোরের সাথে একটি লবঙ্গ মিশিয়ে নিলে খেতে বেশ ভালো লাগে।
- লবঙ্গ এর পরিবর্তে আপনি গোলমরিচ মিশিয়ে খেতে পারেন।
থোরের রসের কি কি উপকারিতা আছে
আপনারা অনেকেই কলার থোড়ের রসের কি কি উপকারিতা আছে এই সম্পর্কে বিভিন্ন জায়গায়
খোঁজাখুঁজি করে থাকেন। কলার থোরের রসের মধ্যে বিভিন্ন রকম পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান
আছে। যদি আপনি নিয়মিত এক কাপ অথবা এক গ্লাস কলার থোর খেতে পারেন তাহলে দেখবেন
আপনার শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের রোগ ব্যাধি দূর হয়ে যাবে। তাই চলুন জেনে নেওয়া
যাক কলার থোরের রসের আরও কি কি উপকারিতা আছে।
থোরের রসের কি কি উপকারিতাঃ
- কিডনিতে হওয়া পাথর দূর করতে সাহায্য করে।
- রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে।
- রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- সুগার নিয়ন্ত্রণে চমৎকার কাজ করে।
- হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
- পেট ব্যথা সহ পেটের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যা দূর করে।
- অ্যাসিডিটি দূর করতে সাহায্য করে।
- শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
কলা গাছে কি কি ভিটামিন আছে
কলাগাছ হলো এমন একটি গাছ যে গাছের কান্ড এবং ফল দুটোই অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ।
কলা গাছের দুটি অংশই খাওয়া যায় সেটা সরাসরি অথবা রান্না করে। এই দুইটি অংশের
মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান বিদ্যামান আছে। যেগুলো আমাদের
শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর উপাদান বের করে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে
আমাদেরকে মুক্ত করে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কলা গাছে কি কি ভিটামিন আছে।
প্রতি ১০০ গ্রাম কলা গাছে বা কলায় যেসব ভিটামিন আছে চলুন সেগুলো ছক আকারে
দেখে নেওয়া যাকঃ
ক্রমিক নং | পুষ্টি উপাদানের নাম | পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ |
---|---|---|
১ | জলীয় অংশ | ৬২.৭ গ্রাম |
২ | খনিজ পদার্থ | ০.৯ গ্রাম |
৩ | আশ | ০.৪ গ্রাম |
৪ | আমিষ | ৭.০ গ্রাম |
৫ | চর্বি | ০.৮ গ্রাম |
৬ | ক্যালসিয়াম | ১৩.০ মিলিগ্রাম |
৭ | লৌহ | ০.৯ মিলিগ্রাম |
৮ | ভিটামিন বি-১ | ০.১ মিলিগ্রাম |
৯ | ভিটামিন বি ২ | ০.০৫ মিলিগ্রাম |
১০ | ভিটামিন সি | ২৪ মিলিগ্রাম |
১১ | খাদ্য শক্তি | ১০৯ কিলো ক্যালরি |
থোরের রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি
থোরের রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি এ সম্পর্কে আপনারা অনেকেই জানতে চান। কলার থোরের
রসের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান
আছে। তাই নিয়মিত কলা থোরের রস খেলে আমরা বিভিন্নভাবে উপকৃত হয়। কিন্তু কলার
থোরের রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম কি। যদি এই বিষয়টি জানা না থাকে তাহলে উপকারের
চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে। তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক করার থোরের রস খাওয়ার সঠিক
নিয়ম কি।
কলার থোরের রস খাওয়ার সঠিক নিয়ম হচ্ছে, প্রথমত আপনাকে কলার থোর গুলোকে ভালোভাবে
পরিষ্কার করে ছোট ছোট করে কেটে দিতে হবে। এরপর কলার থোর এর কাটা অংশগুলোকে
ভালোভাবে পিষে রস বের করে নিতে হবে। উক্ত রস আপনি কোন রোগের জন্য খাবেন তা আগে
থেকে ঠিক করে নিতে হবে। যেমন মূত্রনালীর সমস্যা দূর করতে কলার থোরের রসের সাথে
এলাচ মিশিয়ে নিতে হবে।
গলব্লাটার এর ঝুঁকি কমানোর জন্য কলার থোরের রসের সাথে একটু লেবু মিশিয়ে নিয়ে
খেতে হবে।আবার ওজন কমানোর জন্যও কলার থোরের রসে সাথে লেবু মিশিয়ে খেতে হবে।
কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য কলার থোড়ের রসের সাথে লবঙ্গ অথবা
গোলমরিচ মিশিয়ে খেতে হবে। আর সাধারণত অন্যান্য রোগের জন্য শুধুমাত্র কলার থোড়ের
রস খেলেই উপকার পাওয়া যায়।
কলার থোরে কি থাকে
কলার ধরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান আছে। যা আমাদের
মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী ও প্রয়োজনীয়। কলার থোর খাওয়ার কারণে আমাদের
শরীর থেকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর টক্সিন বেরিয়ে যায়। যার ফলে ডায়াবেটিস
রক্তচাপ ও ক্যান্সারের মতো রোগের ঝুঁকি হতে মুক্ত থাকা যায়। কলার থোরে ভিটামিন
সি, লৌহ, ক্যালসিয়াম, আমিষ, চর্বি, আশ, ভিটামিন, খনিজ পদার্থ ও উল্লেখযোগ্য
পরিমাণ জলীয় অংশ বিদ্যামান থাকে।
কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর
কলা গাছের ভেতরের অংশের নাম কি?
কলা গাছের ভেতরের অংশকে বলা হয় কলার থোর। তবে একে আঞ্চলিক ভাষায় বলা হয় আটে।
এটি বহু গুনে গুণান্বিত একটি খাবার। কলা গাছের এই ভিতরের অংশ আমাদের শরীরের
জন্য অনেক উপকার করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে মুক্তি দান করে থাকে। বিভিন্ন
ধরনের ক্ষতিকর পদার্থ শরীরে জমা হতে দেয় না। শরীর থেকে চর্বি দূর করতে সাহায্য
করে এবং ইনসুলিন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
থোর কি?
কলা গাছের কাণ্ডের ভেতরের অংশকে বলা হয় থোর। এটি কলা গাছের ভেতরের মূল অংশ। যে
অংশটি দেখতে হালকা সাদা বর্ণের। গ্রাম্য ভাষায় এদিকে বলা হয় আটে। এটি
অন্যান্য খাবারের তুলনায় অনেক বেশি উপকারী ও প্রয়োজনীয়। প্রত্যেক মানুষেরই
মাঝে মাঝে থোর খাওয়া উচিত। কারণ এটি আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর বজ্র পদার্থ দূর
করে এবং শরীরে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যোগ করে।
কলা কি কিডনির জন্য ক্ষতিকর?
আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন কলা কিডনির জন্য ক্ষতিকর কিনা। কলার মধ্যে
বিভিন্ন উপাদানের পাশাপাশি পটাশিয়াম এর উপস্থিতি বেশি থাকে। যারা কিডনি রোগে
আক্রান্ত তাদের জন্য পটাশিয়াম বেশ ক্ষতিকর। তাই কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে কলা
না খাওয়াই ভালো। এতে করে কিডনির ক্ষতি আরও বেশি হতে পারে।
রাতে কলা খেলে কি হয়?
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে যদি রাতের বেলা একটি বা দুটি কলা খাওয়া যায় তাহলে ওই
দিনের ঘুম বেশ ভালো হয়। কারণ কলার মধ্যে আছে পটাশিয়াম। আর পটাশিয়াম
পেশীগুলোকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। আপনি সারাদিন পরিশ্রম করে ক্লান্ত হয়ে
যদি কলা খান তাহলে কলার মধ্যে থাকা পটাশিয়াম আপনার শরীরের পেশিগুলোকে আরাম
প্রদান করতে সাহায্য করে। যার ফলে আপনার ঘুম ভালো হয় এবং শরীর ভালো থাকে।
কলা কাদের খাওয়া উচিত নয়?
কলা অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার হল অনেকের জন্য এই খাবার খাওয়া একদম উচিত নয়।
বিশেষ করে যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত তাদের একেবারেই কলা খাওয়া যাবে না। কারণ
কলার মধ্যে আছে পটাশিয়াম। যা কিডনি রোগ সহ বিভিন্ন ধরনের রোগ বাড়াতে সাহায্য
করে। তাই আপনি যদি একজন কিডনি রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কলা কোনভাবে খাওয়া
উচিত নয়।
লেখকের মন্তব্যঃ কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন
উপরের আলোচনা থেকে আপনারা জানতে পারলেন কলার থোর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। কলার থোর আমাদের মানব দেহের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
কলার থোর খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর থেকে ক্ষতিকর বজ্র পদার্থ বা টক্সিন বেরিয়ে
যায়। যার কারণে আমরা বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রোগ থেকে মুক্তি পেয়ে যায়। সেই
সাথে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যোগ হয়।
তবে কলার থোর খাবার পরে উপকারিতার পাশাপাশি কিছু কিছু অপকারিতাও দেখা যায়।
পৃথিবীতে প্রত্যেকটা জিনিসেরই সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই থাকে। তেমনি কলার
ক্ষেত্রেও উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা আছে। কারণ কলার থোরের মধ্যে আছে
পটাশিয়াম যা কিডনি আক্রান্ত রোগীর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এছাড়াও বেশি পরিমাণে
কলার থোর খাওয়ার কারণে হৃদ রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
এট্রাকশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়
comment url